তাজমহলের ‘প্রকৃত ইতিহাস’ চেয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন

তাজমহল, আগ্রা । ফাইল ছবি

নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) একজন নেতা ১৭ শতকের সমাধিস্থল তাজমহলের “বাস্তব ইতিহাস অধ্যয়ন” করার জন্য একটি সত্য অনুসন্ধান কমিটি গঠনের জন্য ভারতের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছেন।

ডানপন্থী হিন্দু গোষ্ঠীটি ১৯৮৯ সাল থেকে কখনো কখনো দাবি করেছে যে, তাজমহল হিন্দুদের একটি মন্দির। ১৯৮৯ সালে ভারতীয় লেখক পি এন ওকের “তাজমহলঃ দ্য ট্রু স্টোরি” প্রকাশিত হয়। বইটিতে ওকে লিখেছেন, তাজমহল দ্বাদশ শতকে হিন্দুদের একটি মন্দির হিসেবে নির্মিত হয়েছিল। এটিকে তেজো মহালয়া বা ভগবান শিবের প্রাসাদ বলা হতো।

২০১৭ সালে আইনজীবীদের একটি দল আগ্রার একটি আদালতে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় থাকা মুঘল যুগের সমাধিস্থলটিকে হিন্দু মন্দির হিসেবে ঘোষণা করার জন্য একটি বিচারিক হস্তক্ষেপ চেয়ে আবেদন করেছিল। কয়েক সপ্তাহ পরে আদালতে এক বিবৃতিতে এএসআই বলেছিল, তাজমহল প্রকৃতপক্ষে একটি মুসলিম সমাধি যা সম্রাট শাহজাহান তাঁর প্রয়াত স্ত্রী মমতাজ মহলকে সম্মান জানানোর জন্য তৈরি করেছিলেন।

মধ্যযুগীয় প্রত্নতত্ত্ব ও স্থাপত্যের বিশেষজ্ঞ রেজাভি ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেছেন, “শ্বেত মর্মর দিয়ে তৈরি তাজমহলটি একটি সাধারণ ইরানি অবিভাজ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করে নির্মিত হয়েছিল। আপনি কোনো সময়কালের এমন কোনো মন্দির দেখাতে পারবেন না যা শ্বেতমর্মরের ওপর গম্বুজ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বা এই জাতীয় পরিকল্পনা অনুসরণ করে যা ভারতে নির্মিত হয়েছে।তাজমহলকে মন্দির বা হিন্দু কাঠামো বলে কেউ দাবি করলে সেটি হাস্যকর।দাবিটি কল্পনার ওপর ভিত্তি করে করা।”

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অপুর্বানন্দ ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন বাইরের লোকের কাছে ভারতকে সংজ্ঞায়িত করে তাজ মহল। তিনি বলেন, “হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলি এটা গ্রহণ করতে পারে না যে ভারতীয় সংস্কৃতি নির্মাণে মুসলমানদেরে অবদান রয়েছে। তারা মনে করে সবকিছু এক সময় হিন্দুদের ছিল এবং পরে তা ইসলামি আকার ধারণ করে। তারা বলে তারা মূল হিন্দু অবস্থানটি পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করছে”।