ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন যে, দেশটির রাজধানী অঞ্চলে রুশ বাহিনী পরিচালিত ইরানের তৈরি ড্রোন আঘাত হেনেছে। একইসাথে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী এও জানায় যে, বিগত একদিনে দেশটির ৪০টি ভিন্ন ভিন্ন জনবসতিতে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের দফতরের উপপ্রধান, কিরিলো টিমোশেঙ্কো বলেছেন, ড্রোনগুলো কিয়েভের আশেপাশের “গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত স্থাপনায়” আঘাত করে।
কর্মকর্তারা ড্রোনগুলোকে তথাকথিত ‘কামিকাজে বিমান’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। সেগুলো বিস্ফোরক বহন করে এবং লক্ষ্যবস্তুতে গিয়ে নিজেদের আছড়ে ফেলে।
মিকোলায়েভ এর মেয়র ওলেকসান্দার সিঙ্কোভিচ জানান, ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের এই শহরে বৃহস্পতিবার রাতভর গোলাবর্ষণে একটি পাঁচতলা অ্যাপার্টমেন্ট ভবন ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।
আকাশপথে চালানো এই হামলাগুলো এমন সময়ে হল, যখন কিনা ইউক্রেনের সহযোগীরা দেশটিকে অতিরিক্ত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ করতে কাজ চালাচ্ছে।
ব্রিটেন বৃহস্পতিবার ঘোষণা দেয় যে, তারা ইউক্রেনকে এমন রকেট পাঠাবে যেগুলো ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করতে সক্ষম। একইসময়ে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর জন্য সহায়তা বিষয়ে আলোচনা করতে নেটো প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা ব্রাসেলসে সমবেত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বুধবার বলেন, যখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ৩,০০,০০০ রিজার্ভ সৈন্যের জোরপূর্বক নিয়োগের মাধ্যমে “অপ্রশিক্ষিত, অনিচ্ছুক রুশ বেসামরিক মানুষজনকে জোরপূর্বক যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর চেষ্টা করছেন”, তখন “ইউক্রেন বিশ্বকে দেখিয়েছে যে নিজেদের গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্বের জন্য লড়াইরত স্বাধীন মানুষের সামরিক বাহিনী ও সামরিক শক্তিই টিকে থাকে।”
অস্টিন বলেন, “তাদের সাহসিকতা আমাদের সবাইকে অনুপ্রাণিত করে। পুতিন যুদ্ধকে বেছে নিয়েছেন। কিন্তু ইউক্রেন নিজেদের প্রতিরক্ষাকে বেছে নিয়েছে। এবং তারা সেটা চমৎকারভাবে করেছে।”
এদিকে, পুতিন বলেছেন যে, এই সপ্তাহে রাজধানী কিয়েভ সহ ইউক্রেন জুড়ে শহরগুলোতে চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলাগুলো, গত শনিবারের ট্রাক বোমা হামলার সরাসরি প্রতিক্রিয়া হিসেবে করা হচ্ছে। ঐ ট্রাক বোমা হামলায় ক্রাইমিয়া উপদ্বীপের সাথে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডকে সংযোগকারী, কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ কার্চ সেতুটি আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে যায়। রাশিয়া ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া উপদ্বীপটি দখল করেছিল।