যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি আরবের মধ্যে তেল নিয়ে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের সম্পর্কে ফাটল ধরাচ্ছে

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সফরের প্রাক্কালে, সৌদি আরবের রাজধানী জেদ্দার এক চত্বরে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের পতাকার নিচে দাঁড়িয়ে আছেন এক ব্যক্তি, ১৪ জুলাই ২০২২।

তেল নিয়ে সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বন্দ্বটি, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তাদের এই আরব মিত্রের দীর্ঘদিনের সম্পর্কে চাপ সৃষ্টি করছে। সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি কর্মকর্তারা ওপেক প্লাস এর সমন্বয়ে তেলের দৈনন্দিন উৎপাদন ২০ লক্ষ ব্যারেল হ্রাস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সৌদিরা বলছে তেলের মূল্যে ধস নামা ঠেকাতে এই উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন পদক্ষেপ রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলোর প্রভাব হ্রাস করছে ও জ্বালানী নিরাপত্তাকে হুমকির মধ্যে ফেলেছে।

এই গ্রীষ্মে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সৌদি আরব সফর করেন ও কার্যতপক্ষে দেশটির নেতা, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এর সাথে দেখা করে, জ্বালানীর দাম কমানোর উদ্দেশ্যে দেশটির তেলের উৎপাদন আরও বাড়াতে রাজি করানোর চেষ্টা করেন। এমন সফরের রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলো বেশ আলোচনার সৃষ্টি করে।

নিউইয়র্কের কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস এর সম্মানিত ফেলো এবং মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সাবেক উপদেষ্টা, মার্টিন ইনডিক বলেন, এমবিএস হিসেবে পরিচিত যুবরাজ সালমান, বাড়তি তেল সরবরাহে বাইডেনকে দেওয়া তার প্রতিশ্রুতি থেকে পিছু হটে এসেছেন।

তিনি বলেন, “যুবরাজ অঙ্গীকার করেছিলেন যে, বছরের শেষ পর্যন্ত আগামী কয়েকমাস ধরে উৎপাদন বৃদ্ধি করে, দৈনন্দিন ৭,৫০,০০০ ব্যারেল পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে। প্রেসিডেন্ট সেখানে থাকাকালীন যুবরাজ এই অঙ্গীকারই করেছিলেন। কিন্তু সমঝোতা হয়েছিল যে, বিস্তারিত ঘোষণা করা হবে না। তারা তাদের সেই অঙ্গীকার রক্ষা করেননি।”

কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস এর এক অনলাইন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময়ে, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে নিজেদের সম্পর্ক বা বৃহত্তর পরিস্থিতি বিবেচনা করার ক্ষেত্রে সৌদি আরবের অনিচ্ছাকে, ইনডিক “অত্যন্ত অসুবিধাজনক” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

কংগ্রেসের কিছু কিছু সদস্য এমন আহ্বানও জানিয়েছেন যেন, সৌদি আরবকে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তাগুলো পুনর্বিবেচনা করা হয়।