ইরানে গ্রেপ্তারকৃত প্রতিবাদকারীদের মধ্যে প্রথম মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

ফাইল: এপি দ্বারা নিযুক্ত নয় এমন একজন ব্যক্তির ধারন করা ভিডিও থেকে এবং ইরানের বাইরে প্রাপ্ত এই ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ তেহরানে মাহসা আমিনির মৃত্যুর ৪০ তম দিনে সংঘটিত একটি বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে আসছে। ২৭ অক্টোবর, ২০২২।

ইরানে প্রথমবারের মতো চলমান সরকার বিরোধী বিক্ষোভে ভূমিকার জন্য দোষী সাব্যস্ত একজন বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, তেহরানে একটি রাস্তা অবরোধ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যকে আক্রমণ করার অভিযোগে বৃহস্পতিবার সকালে মোহসেন শেকারি(২৩)-কে ফাঁসি দেয়া হয়।

ইরানের আদালত বিক্ষোভের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছে। তবে শেকারিই প্রথম ব্যক্তি যার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলো।

ইরানে ক্যাম্পেইন ফর হিউম্যান রাইটসের পরিচালক হাদি ঘাইমি ভয়েস অফ আমেরিকার ফার্সি বিভাগকে বলেছেন, ইরানের আদালতে প্রদত্ত সমস্ত মৃত্যুদণ্ড আদতে “রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড।”

সেপ্টেম্বরে একজন ইরানি কুর্দি নারী মাহসা আমিনির (২২) মৃত্যুর কারণে ইরানে গণ-অস্থিরতা শুরু হয়েছিল। সঠিকভাবে হিজাব না পরায় দেশটির নৈতিকতা পুলিশ তাকে আটক করেছিল।

বুধবার ইরানের ছাত্র বিক্ষোভকারীরা দেশজুড়ে রাস্তায় ছিল। ভয়েস অফ আমেরিকার ফার্সি বিভাগের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তত ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। সেখানে নিরাপত্তা বাহিনী এবং সাদা পোশাকের বাহিনী শিক্ষার্থীদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

ইরানে ইতোমধ্যেই বিক্ষোভকারীদের ডাকা ধর্মঘটের ৩য় দিন চলছিল। সরকারে সংস্কার করার জন্য তারা সারাদেশের দোকান মালিকদের বুধবার তাদের ব্যবসা বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছিল।

শনিবারের একটি প্রতিবেদনে আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা আইএসএনএ ইরানের প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ জাফর মনতাজেরির বরাত দিয়ে বলেছে, নৈতিকতা পুলিশের কার্যক্রম “বন্ধ করা হয়েছে।”

এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে অবশ্য অধিকার কর্মীরা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

সরকারি কর্মকর্তারা এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলেছে, সাম্প্রতিক বিক্ষোভে অন্তত ৪৭১ জন নিহত হয়েছে।

ভয়েস অফ আমেরিকা ফার্সি বিভাগ এই প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছে। এ প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এপি, রয়টার্স এবং এএফপি থেকে নেয়া হয়েছে।