ওয়াশিংটনে সমবেত নেতাদের আলোচনায় আফ্রিকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা

ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্র-আফ্রিকা নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বক্তব্য রাখেন, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২২।

যুক্তরাষ্ট্র এই সপ্তাহে একটি শীর্ষ সম্মেলনে, ওয়াশিংটনে আফ্রিকার নেতাদের স্বাগত জানায়। সেখানে আফিকার বেশ কয়েকটি দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পরিস্থিতি আলোচনার কেন্দ্রে উঠে আসে।

বুধবার কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফ্রিকার ১১টি দেশের ৫৬ জন সাংবাদিক করাগারে রয়েছেন। এসব দেশের কয়েকটিতে সংবাদপত্রের কণ্ঠ রোধ করার ইতিহাস রয়েছে।

বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ইরান ও চীন সবচেয়ে বেশি সাংবাদিককে কারারুদ্ধ করেছে।দেশ দু’টিতে যথাক্রমে ৬২ এবং ৪৩ জন সাংবাদিক কারাগারে রয়েছেন।মিশরে ২১ জন এবং ইরিত্রিয়ায় ১৬জন সাংবাদিককে বন্দি করা হয়েছে। এই সংখ্যা নিয়ে দেশ’দুটি সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার পরিমাপে ১০ টি খারাপ দেশের তালিকায় রয়েছে।

প্রতিবেদনে ঐসব কারারুদ্ধ সাংবাদিকের দুঃখের বিবরণ দেওয়া হয়েছে, যারা এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন, যা সরকারের বিপক্ষে যায়। সিপিজের প্রতিবেদনের তথ্য মতে, ২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৬৩ জন সাংবাদিক বন্দি হয়েছেন। এ সংখ্যা সব চেয়ে বেশি।

সিপিজে'র অ্যাঞ্জেলা কুইন্টাল ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা "বরং একটি পরিহাসস্বরূপ", কারণ "আমাদের এই নেতারা যারা প্রেসিডেন্ট [জো] বাইডেন, [পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন] এর সাথে বৈঠক করছেন এবং বাণিজ্য চুক্তি করছেন, তাদের মধ্যে আফ্রিকার সেই সব নেতা, যারা সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সাংবাদিককে কারাগারে পাঠিয়েছেন।”

ইরিত্রিয়া হলো সেই সব দেশের একটি, যাকে এই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। কেননা দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। তবে অধিকারবাদী ও নির্বাসনে থাকা লেখকরা দেশটিতে বন্দি সাংবাদিকদের মুক্তি দাবি করেছেন। বন্দিদের মধ্যে কেউ কেউ ২১ বছর ধরে কারাগারে আছেন।

ইরিত্রিয়ান লেখক আওয়েট ফিসেহাই বলেছেন, “তাদের অবস্থান অজ্ঞাত, তাদের পরিবার জানে না তারা কোথায় আছে। কেউই জানে না যে তারা কী ধরনের জীবন যাপন করছে বা তারা বেঁচে আছে কি-না।"

ক্যামেরুনে, ইংরেজিভাষী অঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের বিরুদ্ধে দেশটির কর্তৃপক্ষ অভিযান চালানোর সময় কমপক্ষে পাঁচজন সাংবাদিককে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। সিপিজে জানিয়েছে, এই অস্থিরতার খবর নিয়ে কাজ করা সাংবাদিকদের ভয় দেখানো হয়েছে বা তাদের অপহরণ করা হয়েছে।

মরোক্কোতে কমপক্ষে তিনজন সাংবাদিককে আটক করা হয়েছে এবং ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গোতে দু'জন সাংবাদিককে কারাগারে রাখা হয়েছে। সিপিজে আলজেরিয়া, বুরুন্ডি, ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া এবং সেনেগালের একজন করে সাংবাদিককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে নথিবদ্ধ করেছে।

‍রুয়ান্ডায় যে চারজন সাংবাদিককে কারারুদ্ধ করা হয়েছে, তাদের মধ্যে তিনজনকে ইউটিউবে সরকারের সমালোচনামূলক বিষয়বস্তু পোস্ট করার সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়।

রুয়ান্ডার বিচার মন্ত্রক তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের জন্য ভয়েস অফ আমেরিকার অনুরোধে সাড়া দেয়নি।

ভিওএ টিগ্রিগনা সার্ভিসের মিনিয়া আফওয়ারকি এবং মুলুগেটা আতসবেহা এই প্রতিবেদনে অবদান রেখেছেন।