বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের চার মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ১৫৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা নিয়ে ইউনিভার্সাল ফাইন্যান্সিয়াল সলিউশনের (ইউএফএস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ আলমগীরের দুবাই পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায়, কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অফ বাংলাদেশকে (আইসিবি) এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে, ঐ এমডি'র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (২ জানুয়ারি) এ বিষয়ে, একটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নেওয়া হলে, বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত আদেশ দেন। আদালত এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সত্যতার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককে জানাতে বলেছেন।
আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
শনিবার প্রকাশিত ‘১৫৮ কোটি টাকা নিয়ে দুবাই পালিয়েছেন এমডি’ শীর্ষক প্রতিবেদনের একাংশে বলা হয়, শেয়ারবাজারে চার মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ১৫৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে ইউনিভার্সাল ফাইন্যান্সিয়াল সলিউশন (ইউএফএস) নামের একটি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি। এই টাকা নিয়ে ১৩ অক্টোবর দুবাই চলে গেছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ হামজা আলমগীর। ২০১৮ সাল থেকে তহবিল সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করা হয়।
এক্ষেত্রে ব্যাংকের প্রতিবেদন জালিয়াতি এবং ভুয়া এফডিআর (ফিক্সড ডিপোজিট রেট) দেখিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) অন্ধকারে রাখা হয়। আর, এ বিষয়ে চার বছর নিষ্ক্রিয় ছিল ফান্ডের ট্রাস্টি ও কাস্টডিয়ান (গ্যারান্টি দেওয়া প্রতিষ্ঠান) আইসিবি। অডিট কোম্পানিও ভুয়া রিপোর্টকে বৈধতা দিয়েছে। বিএসইসির প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে এ তথ্য। ইতোমধ্যে কোম্পানিটির সঙ্গে কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন না করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। বিএসইসি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এ বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, “মিউচ্যুয়াল ফান্ডের কাজ মানুষের টাকা নিয়ে ব্যবসা করে শেয়ার হোল্ডারদের মুনাফা দেওয়া। এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকলে তা নজিরবিহীন। এর ফলে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমবে। বিষয়টি তদন্ত করে দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”