বাংলাদেশের অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে দুর্যোগ এবং পরবর্তীতে জানমালের ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কমাতে সঠিক সময়ে যথাযথ প্রস্তুতি নিতে বলেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) রাজধানী ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাংলাদেশ স্কাউটসের ৫১তম বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
আবদুল হামিদ বলেন, “সঠিক সময়ে যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়া হলে এসব দুর্যোগের ঝুঁকি কমানো এবং জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ প্রতি বছর বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকে”।
তিনি বলেন, “বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব বিশ্বব্যাপী আজ ভিন্ন বাস্তবতা তৈরি করেছে”।
বাংলাদেশের সকল দুর্যোগ ঝুঁকি কমানোর উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার জন্য স্কাউটদের ধন্যবাদ জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশ স্কাউটস সদস্যরা স্থানীয় জনগণের সঙ্গে উদ্ধার, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কাজে অংশগ্রহণ করে দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
আবদুল হামিদ, সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধশালী ও স্মার্ট দেশে পরিণত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। সরকারের সমসাময়িক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে।
উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে নতুন প্রজন্মকে দক্ষ ও মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে সরকার বাংলাদেশে স্কাউট আন্দোলন জোরদার করতে সার্বিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
আবদুল হামিদ জোর দিয়ে বলেন, তরুণদের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানা উচিত।
তিনি বলেন, “যারা স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের প্রতি আমাদের যথাযথ শ্রদ্ধা জানাতে শিখতে হবে। বাংলাদেশের একটি গৌরবময় ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে। তাদেরও জানা উচিত”।
তিনি বলেন, “ঘরে বসেই তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্বের অনেক কিছু জানা সম্ভব। সবার আগে তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে নিজের দেশ সম্পর্কে জানতে হবে”।
বাংলাদেশের স্কাউটসের প্রধান আবদুল হামিদ বলেন, দেশের সব জেলা ও উপজেলায় স্কাউট ভবন ও প্রশিক্ষণকেন্দ্র নির্মাণ, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুটি করে দল গঠন এবং সব শিক্ষার্থীকে স্কাউট প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে। স্কাউটিং বাংলাদেশের চলমান অগ্রগতির নেতৃত্বে আগামী প্রজন্মকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে সাহায্য করবে।
আবদুল হামিদ বাংলাদেশ স্কাউটের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে তাদের অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২২ সালে সিলভার টাইগার এবং সিলভার ইলিশ অ্যাওয়ার্ড এবং অন্য পুরস্কার প্রাপকদের অভিনন্দন জানান।
২০২২ সালে মোট ৬২৬ স্কাউট রাষ্ট্রপতির স্কাউট পুরস্কার অর্জন করেছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ স্কাউটসের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, ক্যাম্প প্রধান ও প্রধান জাতীয় কমিশনার ড. মোজাম্মেল হক খান।