গণমাধ্যমসহ সর্বত্র ভয়ের পরিবেশ ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে (ডিএসএ) দেশের গণমাধ্যম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গণমাধ্যমসহ সর্বত্র ভয়ের পরিবেশ ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

রোববার (১৬ এপ্রিল) এক ইফতার অনুষ্ঠানে একথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) বিএনপি সমর্থক অংশ জাতীয় প্রেসক্লাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, “গোটা দেশ ও জাতি এক সংকটময় মোড় ও ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। যখন আমরা সংবাদপত্র দেখি এবং টেলিভিশন চ্যানেল দেখি, তখন মনে হয় একই মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রিও ফ্যাসিবাদের আক্রমণে আক্রান্ত।”

“সরকার সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করে দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করছে। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছি, তাদের জন্য এটা বেদনাদায়ক; কারণ একের পর এক সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছে। বর্তমান ফ্যাসিবাদী শাসন গণমাধ্যমসহ সর্বত্র ভয়ের পরিবেশ ছড়িয়ে দিয়েছে। ফ্যাসিবাদ সফল হয় তখন, যখন সমগ্র সমাজে সন্ত্রাসের ভয় তৈরি হয় এবং যখন সন্ত্রাসের রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়;” বলেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, “বাংলাদেশে এখন সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই এবং বর্তমান সরকার এখন যা করছে, অতীতের কোনো সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে এমনভাবে বাধাগ্রস্ত করেনি। মিডিয়া এখন সেলফ সেন্সরশিপ অনুশীলন করে। আপনারা সবাই (সাংবাদিক) এখন চিন্তা করেন যে এটা লেখা যাবে কি-না, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মুখোমুখি হতে পারেন কিনা।”

“অনেক সাংবাদিক এখনো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার মুখোমুখি হচ্ছেন। আমি জেলে দেখেছি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় আমাদের অনেক যুবক সেখানে আটক রয়েছে। সরকার সাংবাদিকদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে দেশে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে যে গণমাধ্যমকর্মীরা এখন ঐক্যবদ্ধভাবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য কাজ করতে পারছে না;” উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, “বর্তমান সরকারের আমলে ৪৪ জন সাংবাদিক নিহত হযেছে। সরকার দৈনিক দিনকাল-সহ অনেক গণমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে। মূল কথা হলো একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য সংবাদপত্রের স্বাধীনতা অপরিহার্য, কিন্তু সরকার বিষয়টি চাপা দিয়েছে।”

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করেন। বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে যেভাবে গণমাধ্যমের সমালোচনা করেছেন, তা একটি সভ্য দেশে কল্পনাও করা যায় না। একটি সভ্য দেশের প্রধানমন্ত্রী এমন ভাষায় কথা বলতে পারেন না।”

দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে সক্রীয় সমর্থনের দেয়ার জন্য সাংবাদিক ও পেশাজীবীদের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।