বাংলাদেশের আশা বস্তুনিষ্ঠভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি অনুসরণ করা হবে: প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম

প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম জানিয়েছেন, “বাংলাদেশ আশা করে যে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি যথেচ্ছভাবে প্রয়োগের পরিবর্তে বস্তুনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করা হবে।” পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।বৃহস্পতিবার (২৫ মে) বিকালে গণমাধ্যমের সামনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এ বিবৃতি পাঠ করেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানান, ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যাক্টের অধীনে, থ্রি-সি বিধান অনুযায়ী ভিসা সীমাবদ্ধতা নীতির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষণা বাংলাদেশ সরকার আমলে নিয়েছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়, “দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সমুন্নত রাখতে সকল পর্যায়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারের দ্ব্যর্থহীন অঙ্গীকারের বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ এই ঘোষণাকে দেখতে চায়।”

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, “বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল দেশ এবং জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে ধারাবাহিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা রয়েছে। সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন পরিচালনার জন্য কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা সত্তার কোনো বেআইনি কর্মকাণ্ড বা হস্তক্ষেপ প্রতিরোধ ও মোকাবেলায় সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, “নির্বাচন কমিশন কর্তৃক স্বীকৃত আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক-সহ নির্বাচনী প্রক্রিয়া কঠোর নজরদারিতে থাকবে।সরকার আশা করে যে স্থানীয় অগণতান্ত্রিক শক্তি, যারা সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায় তারা সতর্ক থাকবে এবং সংবিধানের নির্দেশিত নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বিপন্ন করার তাদের বিভ্রান্তিকর প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকবে।”

বাংলাদেশর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরো বলেছে “কঠিন ত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং দেশের উন্নয়ন অর্জনকে সমুন্নত রাখা সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের জনগণের ওপর নির্ভর করে।”

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে বলেছে, “অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অব্যাহত অঙ্গীকারের পাশে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় সমর্থনকে বাংলাদেশ সরকার ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করে।”

এদিকে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনকে লক্ষ্য করে ঘোষিত যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতিতে, ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করার বিষয়ে জনগণের দীর্ঘদিনের দাবির প্রতিফলন ঘটেছে।” শুক্রবার (২৬ মে) এক বিবৃতিতে তিনি একথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য ভাবে আয়োজনের সকল প্রক্রিয়া নিশ্চিত করাই যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির মূল প্রতিপাদ্য। আর, ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভয় দেখানো, হিংসাত্মক ভাবে জনগণের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ দমন এবং অনুরূপ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সরকার যে অবস্থান নিয়েছে, তা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘদিনের দাবির স্পষ্ট প্রতিধ্বনি।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “বিএনপি মনে করে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতি জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য বিএনপিসহ বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণের দীর্ঘদিনের দাবির স্পষ্ট প্রতিফলন ঘটিয়েছে।

তিনি বলেন, “বিএনপি পরিষ্কারভাবে লক্ষ্য করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতির আওতায় শুধু পুলিশসহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকেই নয়, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা, সাবেক ও বর্তমান সরকারি কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকেও আনা হয়েছে, যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে বিঘ্নিত করতে পারে। তাদের পরিবারের সদস্যদেরও ভিসা নীতির আওতায় আনা হয়েছে।” এসব বিষয় বাংলাদেশের জনগণের দাবির প্রতিফলন বলে উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব।