বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “বাংলাদেশ নিজের পায়ে চলবে, অন্যের ওপর নির্ভরশীল হবো না।” শনিবার (৩ জুন) রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায়, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ নিজের পায়ে চলবে, সরকার দেশ গড়বে। আমরা অন্যের ওপর নির্ভরশীল হবো না, যারা আমাদের ভিসা দেবে না, যারা আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে... এটা ভেবে কোন লাভ নেই।” শেখ হাসিনা বলেন, “পৃথিবীতে অন্যান্য মহাসাগর এবং অন্যান্য মহাদেশ রয়েছে, আমরা সেই মহাদেশগুলোর সঙ্গে অন্য মহাসাগর অতিক্রম করে বন্ধুত্ব করবো। আমাদের অর্থনীতি আরো শক্তিশালী এবং আরো উন্নত এবং প্রাণবন্ত হবে।”
‘ভোট কারচুপি’ এবং ‘জনগণের ভাগ্য নিয়ে খেলেছে’ সেই বিএনপির দিকে তাকানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা। বলেন, “কানাডার হাইকোর্ট বিএনপিকে 'সন্ত্রাসী দল' ঘোষণা করেছে। আর, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির জন্য তারেক জিয়াকে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা দেয়নি।”
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণ ও সুবিধা কী, তা আওয়ামী লীগ ভালো করেই জানে। সেটা মাথায় রেখেই আমরা সব সময় কাজ করি এবং দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় রাখি। ২০৪১ সালের মধ্যে দেশটি একটি উন্নত দেশ হবে। আমরা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ প্রণয়ন করেছি।”
শেখ হাসিনা বলেন যে দেশের মানুষের প্রতি তার আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। তিনি বলেন, “তারা জানে নৌকায় (আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক) ভোট দিলেই তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে। জনগণের জন্য ত্যাগ স্বীকার করলে জনগণ আপনাদের (আওয়ামী লীগকে) প্রতিদান দেবে।”
শেখ হাসিনা আরো বলেন, “আপনাদের সেটা মনে রাখতে হবে। বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য নিয়ে কোনো অপশক্তি যাতে ছিনিমিনি খেলতে না পারে সেজন্য সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। অশুভ শক্তির কবল থেকে দেশের মানুষকে বাঁচানো আমাদের দায়িত্ব।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অগ্নিসংযোগ, গ্রেনেড হামলা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বিএনপি গণতন্ত্রের বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি অনুতপ্ত হন। তিনি বলেন, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছিলো। দেশে স্থিতিশীল ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করছে এবং এর ফলে এই অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “বিশ্ব সম্প্রদায় এখন একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের পক্ষে কাজ করায় আন্দোলন ইতোমধ্যে সাফল্য অর্জন করেছে। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে, গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষ যে আন্দোলন শুরু করেছে, তা দ্রুত গতিতে চূড়ান্ত পর্যায়ে যাচ্ছে।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “ইতোমধ্যে ১৭ জন রাস্তায় তাদের জীবন দিয়েছেন, হাজার হাজার মানুষকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে এবং অনেকে গুম ও হত্যার শিকার হয়েছেন; কিন্তু মানুষ গণতন্ত্রের জন্য তাদের সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “সকল রাজনৈতিক দল, সকল সংগঠন, সকল গণতন্ত্রকামী জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই এবং গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা পুনরুদ্ধার এবং ভোটাধিকার রক্ষার চূড়ান্ত লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হই।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের পথ সুগম করে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে এবং সংসদ ভেঙে দিতে হবে। এই সংকট কাটিয়ে উঠতে এবং জাতিকে বাঁচানোর এটাই একমাত্র উপায়।”