উত্তর কোরিয়া: যুক্তরাষ্ট্র কিম জং উন সরকারের সাথে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করতে চাচ্ছে 

দক্ষিণ কোরিয়ার সোওলে এক খবরের অনুষ্ঠানে টিভির পর্দায় দেখা যাচ্ছে উত্তর কোরিয়ার কিম জং উন-কে। ফাইল ফটোঃ ১৬ জানুয়ারি, ২০২৪।

বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই প্রথম উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক সূত্র স্থাপনের জন্য একাধিক স্পষ্ট ও খোলামেলা প্রস্তাবসহ সে দেশের সঙ্গে আলোচনা ও বৈঠকের জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

উত্তর কোরিয়া বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জুং পাক বলেছেন, “আমরা আলাপ-আলোচনা চাই এবং বহু মূল্যবান আলোচনা রয়েছে” যা ডেমোক্রেটিক পিপল’স রিপাবলিক অফ কোরিয়া বা ডিপিআরকে-র সঙ্গে হতে পারে।

ওয়াশিংটনে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (সিএসআইএস) আয়োজিত ১৮ মার্চের এক অনুষ্ঠানে পাক বলেন, আলোচ্য বিষয়ের তালিকায় থাকতে পারে নিষেধাজ্ঞার বিষয়, মানবিক সহযোগিতা ও পারস্পরিক আস্থা গড়ে তোলার নানা পদক্ষেপ।

তিনি আরও যোগ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র চায় ভুল বোঝাবুঝি ও অনিচ্ছাকৃত উত্তেজনা বৃদ্ধি এড়াতে ঝুঁকি কমানোর পদক্ষেপ নিক উত্তর কোরিয়া। কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস আয়োজিত আরেক অনুষ্ঠানে ৫ মার্চ পাক বলেন, পিয়ংইয়ং পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় অন্তর্বর্তী পদক্ষেপ নিক, তা দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।

জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসনের আমলে ২০০৩ থেকে ২০০৬ সালে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ছয় দলীয় পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ সংক্রান্ত আলোচনায় বিশেষ দূত ছিলেন জোসেফ ডিট্রানি। তিনি ভিওএ-কে শুক্রবার ই-মেইল মারফত বলেন, বাইডেন প্রশাসন তাদের মেয়াদের শুরুর দিকের তুলনায় বিপরীত অবস্থানে গিয়ে এই পদক্ষেপ নিচ্ছে কারণ “কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা চক্রবৃদ্ধি হারে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এই বর্ধিত অস্থিরতা থামাতে ও উত্তেজনা প্রশমিত করতে যাবতীয় উদ্যোগ নেওয়া দরকার।”

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ-প্রকাশিত ছবিতে, কিম জং উনকে বৃহৎ আকারের রকেট লঞ্চারের মহড়া পরিদর্শন করতে দেখা যাচ্ছে। ফটোঃ ১৮ মার্চ, ২০২৪।

চলতি বছরের শুরু থেকে পিয়ংইয়ং বারবার সোওলকে তাদের “প্রাথমিক শত্রু” বলে অভিহিত করেছে এবং একত্রীকরণের বা অখণ্ডতার নিন্দা করেছে। যদি যুদ্ধ বাঁধে তাহলে দক্ষিণ কোরিয়াকে দখল করার প্রস্তুতিও নিচ্ছে উত্তর কোরিয়া।

এই বছর উত্তর কোরিয়া একাধিক রকেট ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে এবং কামান থেকে গোলাবর্ষণ করে কয়েকটি মহড়াও চালিয়েছে। তাদের সর্বশেষ পরীক্ষায় উত্তর কোরিয়া ১৮ মার্চ “নতুনভাবে সজ্জিত সুবিশাল রকেট লঞ্চার” নিয়ে একটি মহড়া দিয়েছে। যুদ্ধ শুরু হলে এই লঞ্চার “বিপর্যয়কর পরিণতি” ঘটাতে পারে বলে জানিয়েছে সে দেশের সরকার-চালিত সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ।

বাইডেন প্রশাসন ২০২১ সালে মেয়াদের শুরু থেকে বলেছে, পূর্বশর্ত ছাড়া উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ে আলোচনা করতে তারা প্রস্তুত। তবে, পিয়ংইয়ং-কে কী প্রস্তাব দেওয়া হবে বা পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ কোন প্রক্রিয়ায় এগোবে তা নিয়ে তারা নীরব থেকেছে। তবে, লক্ষ্যপূরণের দিকে ক্রমবর্ধমান পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।