এইডসের টিকা উদ্ভাবনের সম্ভাবনা

এখন পর্যন্ত টিকা তৈরী করার দুটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। একটি হচ্ছে, কোন ভাইরাসের দূর্বল হয়ে পড়া অংশকে সেই একই রোগ প্রতিরোধ করার জন্য ব্যবহার করা। অপরটি হচ্ছে একেবারে নিষ্ক্রিয় ভাইরাসকে ব্যবহার করা। উভয় পদ্ধতিই নিরাপদ ও কার্যকর প্রমানিত হয়েছে। তবে এইচ আই ভি ভাইরাস প্রতিরোধে তা কার্যকর হয়নি। যাদের শরীরে এইডসের ভাইরাস রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে সফলভাবে এই পদ্ধতি কাজ করে না।

Your browser doesn’t support HTML5

এইডস সংক্রান্ত রিপোর্ট

ডঃ লুই পিকার হলেন ওরেগান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী পরিচালক। তিনি বলেন,‘নানা কারণে এইচ আই ভির টিকা তৈরী করাটা বেশ কঠিন। এই ভাইরাস এমনভাবে গঠিত যে তা বিভিন্ন পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়িয়ে যায়’।

নিষ্ক্রিয় ভাইরাস থেকে এইচ আই ভির টিকা তৈরীর করার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ডঃ পিকার বলেন, দূর্বল ভাইরাস থেকে একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে হয়তো টিকা তৈরী সম্ভব হতে পারে । তিনি বলেন, ২০ বছর আগে এক ধরণের সক্রিয় ভাইরাস থেকে টিকা তৈরী করা হয়েছিল, তখন তা কার্যকর বলেও মনে হয়েছিল, কিন্তু তা নিরাপদ ছিল না। এবং তা প্রাথমিক পর্যায়ের এক পরীক্ষা ছিল, বাঁদরের দেহে সেই পরীক্ষা চালানো হয়। এই পদ্ধতির নাম এস আই ভি অর্থাত্ সিমিয়ান ইম্যুনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস। ডঃ পিকার বলেন, ‘এই এস আই ভি যা পরে কোন ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করতে সক্ষম হয়, কিন্তু তা থেকে রোগটি দেখা দিতে পারে। এবং অনেকে দেখেন যে ওই ভাইরাসের শক্তি যদি কমিয়ে ফেলা হয়, তা হলে সেই ভাইরাস আর কার্যকর থাকে না’।

ডঃ পিকার ও তার সহকর্মীরা গবেষণা করে দেখতে চেষ্টা করেন যে দূর্বল হয়ে পড়া ভাইরাস কেন সংক্রমণ রোধ করতে পারে। তবে একই সঙ্গে সেই ভাইরাস থেকেই যে আবার রোগ দেখা দিতে পারে, সেটা কিভাবে বন্ধ করা যায়। তার দেখলেন যে, টি সেলের সঙ্গে তার একটা সম্পর্ক আছে, ওই টি সেল ভাইরাসের ওপর আক্রমণ চালায়। তবে ভাইরাসটি যদি খুবই দূর্বল হয়ে পড়ে তা হলে কিন্তু টি সেল আর তাকে আক্রমণ করবে না। তাদের মতে এইচ আই ভির কার্যকর টিকা উদ্ভাবনের জন্য মানুষের শরীর থেকেই তা নিতে হবে।

তারা সি এম ভি নামে এক ভাইরাস বেছে নিয়েছেন যা ভিন্ন ধরণের এক ভাইরাস কিন্তু পৃথিবীতে বেশীরভাগ মানুষ ওই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়।

ওদিকে থাইল্যাণ্ডে আর ভি ৩০৫ নামে নতুন এক গবেষণা চালানো হচ্ছে যা থেকে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো যাবে। চিকিত্সা বিজ্ঞানীরা এই ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষার সাহায্যে অদূর ভবিষ্যতে এইডস নিরাময়ের আশা করছেন।