মোহাম্মদ আলী স্মরণে আমাদের বিশেষ পরিবেশনা

Muhammad Ali Muslim Service Erdogan

Worshipers and well-wishers take photographs as the casket with the body of the late boxing champion Muhammad Ali is brought for his jenazah, an Islamic funeral prayer, in Louisville, Kentucky, June 9, 2016.

মোহাম্মদ আলী - আজ বিশ্বজুড়ে শুধু এক বিখ্যাত আমেরিকান মুষ্টিযোদ্ধার নামই নয় খেলার বাইরে এক অসাধারণ মানুষের নাম। সারা বিশ্বের সাথে বাংলাদেশের মানুষও তাঁকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।
মোহাম্মদ আলী স্মরণে আমাদের একটি বিশেষ পরিবেশনা উপস্থাপন করছেন রোকেয়া হায়দার।

Your browser doesn’t support HTML5

মোহাম্মদ আলী স্মরণে বিশেষ পরিবেশনা

কেন্টাকির লুইভিল – আলীর নিজ শহরের ফ্রিডম হলে এই মূহুর্তে অনুষ্ঠিত হচ্ছে মোহাম্মদ আলীর জানাযা। হাজার হাজার শুভানুধ্যায়ীর সমাগম।
৭৪ বছর বয়সে তিনি মারা যান, তবে মোহাম্মদ আলীর নাম ক্রীড়াঙ্গনেই নয় তা ছাড়িয়ে দূর দূরান্তে ধ্বনিত হয়েছে বহু বছর ধরেই। ভিয়েতনাম যুদ্ধে যোগ দিতে অস্বীকার করা, রাম্বল ইন দ্য জাঙ্গল হেভীওয়েট শিরোপার লড়াই সেদিনের সেরা মুষ্টিযোদ্ধা জর্জ ফোরম্যানের সঙ্গে আফ্রিকার যাইরে আর তিনবার হেভীওয়েট শিরোপা জয় করা। আলী নামটি খেলার বাইরে বহু সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িযে পড়ে।
আর লুইভিল শহরটি ছিল তার ছেলেবেলার নিজস্ব আঙ্গিনা। লুইভিলে এক প্রতিবেশী ক্রিস ফোরহ্যাণ্ড ওয়েস্ট এণ্ডেই থাকেন। তিনি গর্বিত মোহাম্মদ আলীর মুষ্টিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ শুরু সেখান থেকেই তার প্রভাব অনেকখানি। তিনি বলেন,‘মোহাম্মদ আলী যে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী নিযে জীবনে এগিয়ে গেছেন তা থেকেই আমিও উৎসাহ পেয়েছি। জীবনের ইতিবাচক প্রভাবে বিশ্বাস করেছি।’

Muhammad Ali Funeral Venue-1

মার্ক স্টা্ম্পলি এখন লুইভিলে বাস করেন। তার যখন প্রথম দেখা আলী তার দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে হাত বাড়িযে দিয়েছিলেন।কয়েক দশক আগের কথা কৃষ্ণাঙ্গ সমাজে তখন অনেক সমস্যা ছিল।তিনি সবাইকে সাহস ও শক্তি যুগিয়েছেন।তার উপস্থিতিই যেন সকল উদ্দীপনার উৎস মনে হতো।
মারজরি হাফম্যান বয়স ৭৯ বছর সারা জীবন ওই লুইভিলেই কাটিয়েছেন।ছেলেবেলায় বাড়ীর পাশেই পার্কে আলী ও তার বন্ধুদের সঙ্গে খেলা করেছেন। তিনি মনে করেন আলী কিশোর তরুন – যুবসমাজের জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। মারজরি বলেন, ‘ আমি কিশোর তরুনদের বলি এমন কোন বিষয় নেই যে তোমরা করতে পারবে না।তখন তারা চিন্তা করে ।আমি বলি ঈশ্বরে বিশ্বাস করো। তারা হয়তো আর এক মোহাম্মদ আলী হতে পারে অথবা তারা যা চায় সেটাই হতে পারে, তাই করতে পারে।’

Muhammad Ali Muslim Service

মোহাম্মদ আলী যুদ্ধে যাননি কিন্তু দেশে দেশে যুদ্ধ সম্পর্কে তার মতামত সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন।অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। সামাজিক ও মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন।বিশেষ করে কিশোর তরুনদের উন্নয়নে কাজ করেছেন। গড়ে তুলেছেন মোহাম্মদ আলী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। যে পার্কিনসন্স রোগে আক্রান্ত হন তা নিরাময়ের লক্ষ্যে গবেষণার জন্য তহবিল সংগ্রহ শুরু করেন। জাতিসংঘের বিশেষ শুভেচ্ছা দূত হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭৮ সালের কথা মোহাম্মদ আলীর সাড়া জাগানো বাংলাদেশ সফরের কথা মনে পড়ছে নিশ্চয়ই? বিমানবন্দর থেকে গোটা পথ ছোট বড় স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রী আলী ভক্ত সবাই রাস্তার দুধারে সারি বেঁধে তাকে স্বাগত জানায়। সে কথাই স্মরণ করলেন সেদিনের এক ছাত্রী। আর মোহাম্মদ আলীর জন্য ১৯৭৮ সালে আয়োজন করা হয়েছিল এক মজার লড়াই। রিংএর একদিকে সেরা তারকা মোহাম্মদ আলী আরেকদিকে বাংলাদেশের ক্ষুদে মুষ্টিযোদ্ধা তখন বোধহয় ১২-১৩ বছর বয়স কিশোর গিয়াসউদ্দিন।
আজকের গিয়াসউদ্দিনের ভাবনায় সেই দিনটি চির উজ্জ্বল।
তার খেলার সীমানা ছাড়িয়ে দেশে বিদেশে তার অবদানের মাঝেই জনসাধারণের চ্যাম্পিয়ান মোহাম্মদ আলী, সবার হৃদয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে রইবেন।