বাংলাদেশের বাতাস বিপজ্জনক মাত্রায় দুষিত। এটা নতুন কোনো খবর নয়। কিন্তু যখন এই দুষিত বাতাসের কারণে তৃতীয় একটি দেশ একজন বাংলাদেশি অভিবাসীকে থাকার অনুমতি দেয় তখনই এটা খবর। ঘটনাটি ঘটেছে ফ্রান্সে। দেশটির বোর্ড্ডে আপিল আদালত এক রায়ে বলেছে, নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশি এই অভিবাসীর দেশে চলে যাওয়া উচিৎ। বাংলাদেশের বাতাস সম্পর্কে আদালতে যা বলা হলো সে কারণে তাকে তাড়িয়ে দেয়া যায় না। ফ্রান্সে থাকার অনুমতি দেয়া হলো। অভিবাসীর আইনজীবী লোগোবিচ রিভিয়ার আদালতে বলেন, বাংলাদেশে বিপদজনক দূষণের কারণে তার মক্কেলের জীবন হুমকিতে পড়বে। বৈশ্বিক র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৯ তম। ২০১৯ সালে রাজধানী ঢাকাকে বিশ্বের ২১তম দুষিত শহর হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স অনুযায়ী ২০১৯ সালে বাংলাদেশে বায়ু দূষণের কারণে এক লক্ষ ৭০ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। গত ২৯শে নভেম্বর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে দুষিত বায়ুর শহর হিসেবে স্থান পায়। সর্বশেষ ১০ই জানুয়ারি আবার দুষিত বায়ুর শহরের শীর্ষে উঠে আসে ঢাকা।
Your browser doesn’t support HTML5
২০১৭ সালে ফ্রান্সের একটি নিম্ন আদালত এই অভিবাসীকে দেশে পাঠানোর পক্ষে রায় দেয়। এরপর এই অভিবাসী উচ্চ আদালতে আপিল করেন। আদালতে আপিলের পক্ষে যুক্তি হাজির করেন আইনজীবী লোগোবিচ রিভিয়ার। বলেন, বাংলাদেশের বাতাসের যে অবস্থা তাতে তার মক্কেলকে দেশে পাঠানো উচিৎ কি উচিৎ না, এটা আদালতকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, হাঁপানি রোগীর শ্বাস -প্রশ্বাসের সমস্যা মারাত্মক রুপ নিতে পারে।
আইনজীবী আরও বলেন, এসব কারণ ছাড়াও এই অভিবাসী যে ওষুধ সেবন করেন তা বাংলাদেশে পাওয়া যায় না। হাসপাতালে ভেন্টিলেশন সুবিধা তেমন উন্নত নয়। তাছাড়াও এই অভিবাসীর বাবা মাত্র ৫৪ বছর বয়সে অ্যাজমা অ্যাটাকে মারা যান। অনেক যুক্তি-তর্কের পর আদালত তার রায়ে বলেন, এই অবস্থায় তাকে দেশে ফেরত পাঠানো যাবে না। আইনজীবী রিভিয়ার এই রায়কে নজীরবিহীন বলে বর্ণনা করেন। ফ্রান্সের আদালতে এর আগে এমন কোনো রায় হয়নি।
উল্লেখ্য যে, ২০১১ সনে ৪০ বছর বয়সে এই ভুক্তভুগি অভিবাসী ফ্রান্সে যান। ২০১৫ সনে অস্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পান।