অযোধ্যায় রামের মন্দির তৈরির প্রাথমিক পর্ব শুরু হয়েছে

করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় সারা পৃথিবী যখন ব্যতিব্যস্ত, ঠিক সেই সময় ভারতের উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনৌয়ের লাগোয়া অযোধ্যায় রামের মন্দির তৈরির প্রাথমিক পর্ব শুরু হয়ে গেল আজ বুধবার সকালে। আগের থেকেই ক্ষেত্র প্রস্তুত ছিল, বলা হয়েছিল ১০ই জুন ভিত পুজো হবে। তার আগে রাম জন্মভূমি থেকে রামমূর্তি সসম্মানে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যাতে মন্দির নির্মাণে বিঘ্ন না ঘটে। আজ সকাল ৮টায় রুদ্রাভিষেক পূজার মাধ্যমে শিবের স্তব করে রাম মন্দিরের ভিত্তি পূজা সম্পন্ন হল। ঘন্টা দুয়েক ধরে এই পুজো চলেছে। রামায়ণে কথিত আছে, রাম যখন লঙ্কার রাজা রাবণকে পরাজিত করে সীতাকে উদ্ধার করে আনতে লঙ্কা অভিযানে যান, তার আগে স্তোত্র পাঠ ও শিব বন্দনা করে তিনি শিবের আশীর্বাদ চেয়েছিলেন, যাতে যুদ্ধ জয় করা যায়। সেই থেকে রাম ভক্তরা কোনও একটা পুণ্যকর্ম করার আগে শিবের বন্দনা করে নেওয়া শুভ বলে মনে করেন। আজ রুদ্রাভিষেক পূজা বা শিবের অর্চনা তারই অঙ্গ ছিল। রাম জন্মভূমি মন্দির কমিটি আজকে পূজাস্থল থেকে জানিয়েছে, আজ থেকে আর দুই-আড়াই বছরের মধ্যেই মন্দিরের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। তাঁরা বলেন, ইতিমধ্যে ৪০% কাজ হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ পাথর খোদাই করে সেগুলো কোথায় কোথায় বসানো হবে তার ছক তৈরি করা হয়েছে। মন্দিরের রূপকার একজন বিশিষ্ট স্থপতি, ভারতীয় হিন্দু পরিষদ এই স্থপতিকে নিযুক্ত করেছে। বিভিন্ন দেশে হিন্দু মন্দির তৈরি করার ব্যাপারে তাঁর যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে। এখন করোনার জন্য নিয়মের নানান রকম কড়াকড়ি চলছে, তাই আজকের অযোধ্যার পূজার স্থলে খুব বেশি লোকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। তবে লক্ষণীয় ছিল যে একজনের মুখেও মাস্ক ছিল না। রাম জন্মভূমি মন্দির নির্মাণের দায়িত্ব পাওয়া কমিটির একজন মহন্ত বেশ কিছুদিন আগেই বলে দিয়েছিলেন, "আমাদের ওপর রামের আশীর্বাদ রয়েছে, তাই করোনা ভাইরাস আমাদের কোনও ক্ষতি করতে পারবে না।" এ ব্যাপারে সরকারি কোনও প্রতিক্রিয়া অবশ্য জানা যায়নি। তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, যিনি নিজে রাম মন্দিরের একজন সমর্থক এবং ভারতীয় জনতা পার্টির নেতা, তিনি কিন্তু বারবার বলেছেন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে হলে মাস্ক পরা অবশ্য কর্তব্য এবং কোনও জনসমাবেশ নয়।

এর মধ্যেই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ যোগী বিধানসভায় একটি বিশেষ অর্ডিন্যান্স বলে রাজ্যে গো হত্যা নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, কেউ গো হত্যা করলে প্রথমে তার সাত বছর কারাদণ্ড ও এক থেকে তিন লাখ টাকা জরিমানা হবে। দ্বিতীয় বার একই অপরাধ করল ১০ বছর কারাদণ্ড এবং ৫ লাখ টাকা জরিমানা।

দীপংকর চক্রবর্তী, ভয়েস অফ আমেরিকা, কলকাতা

Your browser doesn’t support HTML5

অযোধ্যায় রামের মন্দির তৈরির প্রাথমিক পর্ব শুরু হয়েছে