বাংলাদেশে কভিডে একদিনে ১০৮ জনের মৃত্যু: লক-ডাউন নিয়ে নীতি নির্ধারকদের ভাবনা

নীতি নির্ধারকরা বাংলাদেশের নাজুক করোনা পরিস্থিতির গতি-প্রকৃতি পর্যালোচনা করছেন। লকডাউন ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছেন। সবাই এক মত, করোনা পরিস্থিতি আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় খারাপ। গত একদিনের চিত্র ভয়াবহ। এ সময়ে মারা গেছেন ১০৮ জন।

নীতি নির্ধারকরা বাংলাদেশের নাজুক করোনা পরিস্থিতির গতি-প্রকৃতি পর্যালোচনা করছেন। লকডাউন ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছেন। সবাই এক মত, করোনা পরিস্থিতি আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় খারাপ। গত একদিনের চিত্র ভয়াবহ। এ সময়ে মারা গেছেন ১০৮ জন। এর আগে ১৯শে এপ্রিল ১১২ জন মারা যান। এটা ছিল একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যু। ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৮৬৯ জন। শনাক্তের হার ২১ দশমিক ২২ শতাংশ।

করোনা সম্পর্কিত জাতীয় কারগরি কমিটি অবিলম্বে শাটডাউন দেয়ার পক্ষে মত দিয়েছে। তারা মনে করেন, শাটডাউন ছাড়া এই মুহুর্তে আর কোনো বিকল্প পথ খোলা নেই। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন লকডাউনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। শুক্রবার গণমাধ্যমকে বলেন, যেকোনো সময় লকডাউন দেয়া হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট প্রকাশের পর লকডাউন নিয়েই ভাবা হচ্ছে বেশি। সংস্থাটি গোটা বাংলাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ বলে মত দিয়েছে। এর মধ্যে ৪০টি জেলা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

করোনায় আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম টেস্ট হচ্ছে বাংলাদেশে। পরিসংখ্যান ভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, প্রতি দশ লাখ জনসংখ্যার বিপরীতে বাংলাদেশে টেস্ট হয় মাত্র ৩৮ হাজার ৬৯৯ টি। শুরুতে করোনা ছিল অনেকটা ঢাকা কেন্দ্রীক। বাইরের জেলাগুলোতে বিচ্ছিন্নভাবে এর আঁচড় লেগেছিল। এখন সারা দেশেই ছড়িয়েছে। দু' সপ্তাহ ঢাকায় সংক্রমণের হার ছিল ১০ এর নিচে।গত সপ্তাহ থেকে সংক্রমণের উর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে । গত চারদিনে ঢাকায় সংক্রমণ বেড়েছে বিপদজনকভাবে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে অস্বাভাবিকভাবে সংক্রমণ বেড়েছে। খুলনা বিভাগে একদিনে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ। ঝিনাইদহে একদিনে সংক্রমণ হয়েছে ৬১ দশমিক ৯ শতাংশ। পটুয়াখালীর পরিস্থিতিও অবনতির দিকে যাচ্ছে। সেখানে ইতিমধ্যেই সংক্রমণ ৪২ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। কুষ্টিয়া, বগুড়া ও মৌলভীবাজারে ৪২ শতাংশ অতিক্রম করেছে।

করোনাকালে বাংলাদেশে ৭৭ শতাংশ পরিবারের গড় আয় ৩৪ শতাংশ কমেছে। পরিবারের কেউ চাকরি কিংবা আয়ের সক্ষমতা হারিয়েছেন। ব্র্যাক, ইউএন উইমেন বাংলাদেশ এবং নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির যৌথভাবে পরিচালিত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

ঢাকা থেকে মতিউর রহমান চৌধুরী