করোনাভাইরাস: বিশ্বের সর্বসাম্প্রতিক পরিস্থিতি

যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা এখন প্রায় চার লক্ষ, মারা গেছেন বারো হাজারের ও বেশি মানুষ যাদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশেরও বেশি প্রাণ হারিয়েছেন নিউইয়র্কে। যুক্তরাষ্ট্রের এই রাজ্যটি এখন COVID-19 এর কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে। নিউইয়র্কের গভর্ণর অধিবাসীদের সতর্ক করে দিচ্ছেন যে অবস্থা খুব দ্রুত স্বাভাবিক হবার কোন সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন ১৯১৮ সালে মহামারি হিসেবে যে ইনফ্লুয়েঞ্জা দেখা দিয়েছিল তা ছ'মাস অব্যাহত ছিল এবং এতে ঐ রাজ্যে তিরিশ হাজার লোক প্রাণ হারায়।
আজ জার্মানি হলো বিশ্বের পঞ্চম দেশ যেখানে এক লক্ষেরও বেশি লোক এতে আক্রান্ত হন। যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, ইটালি এবং ফ্রান্স এরই মধ্যে এই সংখ্যা অতিক্রম করে গেছে।
ব্রিটেনের একজন কর্মকর্তা বলছেন যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা বা intensive care ইউনিটে দ্বিতীয় রাত অতিবাহিত করার পর আজ বুধবার তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল ছিল। সেখানকার জুনিয়র মন্ত্রী এডওয়ার্ড আরগার বলেছেন জনসন বেশ স্বাচ্ছন্দ বোধ করছেন এবং তাঁর মনের অবস্থাও ভাল। ব্রিটেন গত দু সপ্তা ধরেই লক ডাউনে রয়েছে ।সেখানে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগির নিশ্চিত সংখ্যা হচ্ছে প্রায় ছাপ্পান্ন হাজার এবং মারা গেছেন ছ হাজার একশো জন।
দক্ষিণ কোরিয়া অন্যান্য দেশের মতো বাড়িতে থাকার নিয়ম চালু করেনি তবে শারিরীক দূরত্ব বজায় রাখা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কারণে তারা এই রোগ সংক্রমণের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমাতে পেরেছে। সেখানে সরকার আজ জানিয়েছে যে নতুন করে ৫৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং সে সংখ্যা মোটামোটি স্থিতিশীল। তবে রাজধানী সোওলে বেশি লোক সংক্রমিত হতে পারেন বলে আশংকা রয়েছে। আজ বুধবার শহরের মেয়র, পানশালা এবং নৈশক্লাবগুলো বন্ধ রাখার আদেশ দেন। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী চুং সাই কিউনও ভিসা ছাড়া সে সব দেশের যাত্রীদের দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবেশ স্থগিত ঘোষণা করেছেন, যাদের ওখানে বর্তমানে দক্ষিণ কোরীয়দের প্রবেশও নিষিদ্ধ।
এদিকে নরওয়েও অস্ট্রিয়া এবং ডেনমার্কের মতো লক ডাউন বিষয়ক বিধিনিষেধ শিথিল করা শুরু করবে বলে ভাবছে। সরকার ২০শে এপ্রিল নাগাদ শিশুদের স্কুল খোলার কথা ভাবছে এবং শিশরা তার পরের সপ্তা থেকে স্কুলে যেতে পারবে। নরওয়তে প্রায় ৫৯০০ জন এই রোগে সংক্রমিত হয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপ বিষয়ক পরিচালক আগে ভাগেই লক ডাউন অবস্থা শিথিল করার ব্যাপারে আজ সতর্ক করে দিয়েছেন। ভ্যাটিকান সিটিতে পোপ ফ্রান্সিস তাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছেন যারা এই মহামারিকে কেন্দ্র করে মুনাফা পেতে চাইছে। তিনি প্রার্থনা করেন যে এদের মনোভাবে যেন পরিবর্তন আসে।