অন্ধপ্রদেশে রাসায়নিক কারখানার বিষাক্ত গ্যাসে ১০ জনের মৃত্যু

ভারতে অন্ধপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে একটি রাসায়নিক কারখানায় বিষাক্ত গ্যাস লিক করে এ পর্যন্ত ১০ জন মারা গিয়েছেন, হাজার পাঁচেক লোক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, ৩০০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আজ বৃহস্পতিবার ভোর তিনটে নাগাদ বিশাখাপত্তনমের একটি পলিমার কারখানায় হঠাৎ বিস্ফোরণে বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হতে থাকে। মুহূর্তের মধ্যে আশপাশে গ্রামাঞ্চলে প্রায় দু'কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিষাক্ত গ্যাসের ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে এবং সঙ্গে সঙ্গে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকেন। অনেকে বাড়ির মধ্যে ঘুমিয়ে ছিলেন, কেউ সদ্য ঘুম ভেঙে বাইরে আসার চেষ্টা করেছেন এবং যাঁরা কোনও কারণে বাইরে ছিলেন তাঁরা রাস্তার ওপরেই লুটিয়ে পড়েছেন। পরে স্থানীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল গিয়ে যতজনকে পারে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল মহারাষ্ট্রের পুণে থেকে বিশাখাপত্তনম রওনা হয়ে গিয়েছে।

দেশজুড়ে করোনার কারণে লকডাউন হওয়ার ফলে পলিমার তৈরির কারখানাটি বন্ধ ছিল। এখন কারখানা খোলার জন্য গভীর রাতে কর্মীরা গিয়েছিলেন। দুটি বড় বড় ট্যাঙ্কারে পাঁচ হাজার লিটার রাসায়নিক ভরা ছিল। সেগুলোর ঢাকনা খুলতেই হিস হিস করে গ্যাস বেরোতে শুরু করে। তারপর একটি বিস্ফোরণ ঘটে, তাতেই এই বিপর্যয়। আজকের দুর্ঘটনা অনেকটা ৩৫ বছর আগের ভূপালের গ্যাস বিপর্যয়ের স্মৃতি মনে করিয়ে দিচ্ছে। সেটা অবশ্য আরও অনেক ব্যাপক মাত্রায় হয়েছিল এবং কয়েক লক্ষ মানুষ তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, মারা গিয়েছেন সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি লোক। এখন পর্যন্ত বিশাখাপত্তনমের দুর্ঘটনার ব্যাপ্তি অতটা না হলেও আরো কিছু মৃত্যুর আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডির সঙ্গে কথা বলেছেন। জগনমোহন বিশাখাপত্তনমে চলে গিয়েছেন। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী, তিনজনে জরুরি বৈঠকে বসে কী ভাবে ওখানে ত্রাণ পাঠানো যেতে পারে তা ঠিক করছেন। বিপর্যয় মোকাবিলা দল আগামী ৭২ ঘন্টা ওই এলাকায় কাউকে যেতে বারণ করছে। ঐ এলাকা থেকে হাজার তিনেক মানুষকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। একদিকে সমুদ্র, অন্যদিকে পাহাড়, মাঝখানে ছবির মতন সুন্দর শহর বিশাখাপত্তনম, যাকে ব্রিটিশ আমলে বলা হতো ওয়ালটেয়ার অথবা ভাইজ্যাগ। সেখানে ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি ঘাঁটি আছে, তার থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।

Your browser doesn’t support HTML5

কলকাতা থেকে দীপংকর চক্রবর্তী'র রিপোর্ট।