পোষাক শিল্পের সমস্যা সমাধানে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন: কংগ্রেসম্যান লেভিন

বাংলাদেশের পোষাক শিল্পে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা আর ট্র্যজেডি নিয়ে সমালোচনা না করে তা থেকে শিক্ষা নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগে এই শিল্পকে আরো সমৃদ্ধ করে দেশ ও মানুষের কল্যান করুণ। মঙ্গলবার ক্যাপিটল হিলে, বাংলাদেশের পোষাক শিল্প নিয়ে কংগ্রেশনাল নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বাংলাদেশী আমেরিকান ডেমোক্রেটিক ককাস (বিএডিসি) নেতৃবৃন্দের বৈঠকে এই আহবান ছিল কংগ্রেসম্যান সেন্ড্যার লেভিনের।

লেভিন বলেন, রানা প্লfজা দুর্ঘটনায় ১১’শয়েরও বেশী মানুষ নিহত হয়েছিল। এর কারন বাংলাদেশে শ্রমিকের তেমন অধিকার নেই, কারখানার নিরাপত্তা নেই, নেই নিরাপদ ভবন ও সেখানে পর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপক ব্যাবস্থা। সেসব নিশ্চিত করে সরকার, পোষাক কারখানার মালিক, আন্তর্জাতিক ক্রেতা এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে অংশ নেয়ার পরামর্শ দেন।

বিএডিসির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. নাজমুল আহসান বলেন পোষাক শিল্পের সমস্যা সমাধানতো করতেই হবে; এছাড়া বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যে জিএসপি, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশী পন্যের কোটমুক্ত প্রবেশাধিকারসহ নানা সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে দুদেশের মধ্যে আলোচনা প্রয়োজন।

‘আসুন একসাথে কাজ করে এ শিল্পকে গড়ে তুলি। আমরা প্রবাসীরাতো বটেই, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষে যারা আছেন তাদেরও বাংলাদের প্রতি রয়েছে গভীর ভালবাসা। আসুন বাংলাদেশকে সহায়তা করি আর দু’দেশের বানিজ্য সম্পর্ক বাড়াই। একসাথে কাজ করতে তাতে আমরা সফল হবো’।

তিনি বলেন তাদের সংগঠন দু’দেশের সরকারী বেসরকারী নানা পর্যায়ে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনায় যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে কাজ করে যাবে। তিনি বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান মজেনার পাঠানো বিবৃতি পড়ে শোনান যাতে রাষ্ট্রদূত মজেনা আশা করেন “পোষাক শিল্পে বাংলাদেশ হবে সারা বিশ্বের আইকন”।

অনুষ্ঠানে পোষাক শিল্পের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে, বাংলাদেশ তৈরী পোষাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানীকারক সমিতি বিজিএমইএ’র পাঠানো প্রতিবেদন পাঠ করেন বিএডিসি প্রতিনিধি ড. জাকির। এতে এই শিল্পের সমস্যা, বিশেষ করে শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় ট্রেড ইউনিয়ন, শ্রমিকের মজুরী নিয়ে দ্বন্দ্ব, কারখানা ও ভবন নিরাপত্তা ও অগ্নি নির্বাপক ব্যাবস্থা নিশ্চিত করণে চলমান কর্মকান্ড ও অগ্রগতি তুলে ধরা হয়।

একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম ও নইম আহমেদ তুলে ধরেন পোষাক শিল্পের উন্নয়নে বর্তমানে সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপের কথা।

‘তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের প্রতিশ্রুতি হচ্ছে স্থায়ীভাবে পোষাক শিল্পের নিরাপত্তা ও শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। অনেক সমস্যা থাকা স্বত্বেও অল্প সময়ে এ বিষয়ে সরকারের নেয়া পদক্ষেপ প্রশংসনীয়”।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পোষাক শিল্পের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম বিভাগের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন লেবার বিভাগের কর্মকর্তা।

‘তিনি বলেন বাংলাদেশের পোষাক শিল্পের জন্য বর্তমানে লেবার ডিপার্টমেন্ট ৪টি কর্মসূচীতে অর্থায়ন করছে। এর মধ্যে শ্রমিক নিরাপত্তা, অগ্নি ও ভবন নিরাপত্তা প্রশিক্ষণে সলিডিারিটি কাউন্সিল ও আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠন, বিজিএমইএ সহ অন্যান্যদে মাধ্যমে মাধ্যমে অর্থায়ন করা হচ্ছে”।

এছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কাস রাইটস কনসোর্টিয়াম, ষ্টেট ডিপার্টমেন্ট, ওয়েজ এ্যান্ড মিনস কমিটিসহ কয়েকজন সেনেটর ও কংগ্রেসম্যানের প্রতিনিধি।

আজকের বৈঠকই শেষ নয়। ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার, শ্রমিকের সম্মানজনক মজুরী, ভবন ও কারখানা নিরাপত্তা বাড়ানোসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে পোষাক শিল্পকে সমৃদ্ধ করে বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপসহ সর্বত্র এ ধরনের অনুষ্ঠান করে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যাক্ত করেন অংশগ্রণকারীরা।

Your browser doesn’t support HTML5

পোষাক শিল্পের উন্নয়নে সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়ার আহবান কংগ্রেসম্যান লেভিনের