বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও এখন জিমে যাচ্ছেন

বাংলাদেশের একটি জিমে একজন নারীকে শরীরচর্চা করতে দেখা যাচ্ছে।

মতিয়া রহমান পিয়া একজন শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় তিনি এখন বাড়িতে। নিজেকে ফিট রাখতে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শরীরচর্চার। সদস্য হয়েছেন একটি জিমের।

শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে নিয়মিত জিমে ঘাম ঝড়াচ্ছেন ডাঃ হুমায়রা। তিন মাস ধরে তিনিও নিয়মিত জিমে যাচ্ছেন।

পিয়া ও ডাঃ হুমায়রার জিমে আসার উদ্যেশ্য এক হলেও উম্মে পাপিয়া আসেন ডাক্তারের পরামর্শে, ব্যক্তিগত শারীরিক সমস্যায় তার চিকিৎক তাকে পরামর্শ দিয়েছেন শরীরচর্চা করতে।

শুধু শরীরচর্চার উদ্দেশ্যেই না, নারীদের কেউ কেউ যাচ্ছেন বডিবিল্ডিং-এর দিকেও।

জিমে বারবেল, ডামবেল ও অন্যান্য অনেক ধরণের ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার এর সুযোগ আছে। অভিজাত ফিটনেস সেন্টারে আছে সুইমিংপুলে সাঁতার কাটার সুযোগ। বেশির ভাগ নারী ফিট ও সুস্থ থাকার জন্য জিম ও ফিটনেস সেন্টারে আসেন। কেউ কেউ শরীরের বাড়তি মেদ ফেলে দিতে সাইক্লিং, বিভিন্ন ধরনের ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে জিমে আসেন। বাংলাদেশে যেসব নারী জিমে আসেন, তাদের বেশির ভাগের বয়স ১৫ বছর থেকে ৫০ বছরের মধ্যে।

এই ছবিতে জিমে একজন নারীকে শরীরচর্চা করতে দেখা যাচ্ছে।


রাজধানীর খিলগাঁও-এ লায়নস ফিটনেস এন্ড জিমের নারীদের প্রশিক্ষক জান্নাতুল পাখী জানান, আমাদের খাদ্যাভাস পরিবর্তন ও করোনা পরিস্তিতিতে ঘরে থাকার কারণে অনেকের ওজন বাড়ছে। এছাড়া ব্যক্তিগত সচেতনতা থেকেও নারীদের জিমের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। সাধারণত নারীরা সুস্থ থাকতেই জিমে আসছেন। শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য শরীরচর্চার কোন বিকল্প নেই। কোন কোন নারী ওজন কমাতে বা কেউ কেউ ওজন বাড়াতেও জিমে আসেন।

জান্নাতুল পাখী আরও জানান, শারীরিক নানা অসুস্থতার নিরাময় পেতেও অনেকে জিমে আসছেন। হরমোনাল সমস্যা, ডায়াবেটিস সমস্য ও আর্থ্রাইটিসসহ নানা সমস্যা থাকে অনেক নারীর। এগুলো ভাল করতে নানান ধরণের এক্সারসাইজ করেন অনেকে।

একটি জিমে একাধিক জন ইন্সট্রাক্টর বা প্রশিক্ষক থাকেন। তাদের কাজ আগ্রহী ব্যক্তিকে প্রশিক্ষন দেয়া। এক একজন আগ্রহী নারীর লক্ষ্য আলাদা। তাদের সেই লক্ষ্যের কথা জেনে প্রশিক্ষক তাদের সাহায্য করেন। কোন ব্যয়াম কিভাবে করতে হবে, কি করা যাবে না। এমন কি সাবধানতা সম্পর্কে তিনি সাহায্য করেন।

বর্তমানে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের বেশ কয়েকটি জিম আছে। শুধু ঢাকাতেই না, বাংলাদেশের বেশিরভাগ শহরে জিম রয়েছে। সাধারণত সব জিমেই নারীদের জন্য নারী প্রশিক্ষক থাকে। অভিজাত জিমগুলির পাশাপাশি মোটামুটি মানসম্পন্ন জিমেও নারীদের আলাদা অনুশীলনের সুযোগ আছে। তবে কোন নারী আলাদা অনুশীলন করতে না চাইলে তিনি পুরুষদের সাথে একই স্থানে অনুশীলন করতে পারবেন।

মানভেদে জিমে খরচ বিভিন্ন রকমের। ভর্তির সময় ১ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয় এবং মাসে ৫০০ থেকে ৫০০০ টাকা দিতে হয় একজন নারীকে।