বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত ৭২ হাজার মানুষের খবর নেই

বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত ৭২ হাজার মানুষ কোথায় আছেন তার কোনো সঠিক তথ্য নেই। তবে তারা যে হাসপাতালে নেই এটা বলা যায় নিশ্চিত করে। কারণ সরকারি হিসেবেই চার থেকে পাঁচ হাজার মানুষ হাসপাতালে রয়েছেন। তাহলে এরা কি সবাই বাড়িতেই আছেন? স্বাস্থ্য দপ্তর বলছে, তাদের সঙ্গে এদের কোন যোগাযোগ নেই। সবাই কি বেঁচে আছেন? কারও কোন তথ্য নেই সরকারি নথিতে। উপসর্গ নিয়ে যারা আক্রান্ত বা মারা গেছেন তারা এই হিসেবের বাইরে। সরকারি হিসেবে শনিবার পর্যন্ত দুই লাখ ২১ হাজার ১৭৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়েছেন এক লাখ ২২ হাজার ৯০ জন। মারা গেছেন দুই হাজার ৮৭৪ জন। আর আইসোলেশনে রয়েছেন ১৯ হাজার। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেউ যদি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন তাহলে তাকে সুস্থ হতে কমপক্ষে ২৮ দিন সময় লাগে। আর যারা মারা যান তাদের বেশিরভাগই দুই সপ্তাহের মধ্যে। এতে দেখা যায় কিছু লোক অসুস্থই থাকছে। বাকিরা সুস্থ না অসুস্থ তার কোনো রেকর্ড নেই। এসব কারণে আসলে কত লোক মারা গেছে তা নিয়ে সংশয় রয়েই গেছে। উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিনই অসংখ্য মৃত্যুর খবর আসছে। কিন্তু এই মৃত্যুর খবর সরকারের কোন দপ্তরে নথিভুক্ত হচ্ছেনা।

ওদিকে একের পর এক কেলেঙ্কারির কারণে গোটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। স্বাস্থ্যের মহাপরিচালক পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। নতুন মহাপরিচালক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ভুয়া করোনা রিপোর্ট ও মাস্কের রমরমা ব্যবসার মুখরোচক খবর দেশ বিদেশের মিডিয়ায় শিরোনাম হয়েছে। পরিণতিতে রিজেন্ট, জেকেজি ও অপরাজিতার তিন কর্ণধারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এই নেটওয়ার্কের সঙ্গে কারা জড়িত তা জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, একাধিক নাম এসেছে। এগুলো এখন যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে স্বাস্থ্য সেবার প্রতি মানুষ ভরসা রাখতে পারছেনা। যে কারণে হাসপাতালগুলোতে হাজার হাজার বেড খালি রয়েছে। নমুনা পরীক্ষাও কমে গেছে অস্বাভাবিকভাবে। শনিবার স্বাস্থ্য দপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা অনুরোধ করেছেন উপসর্গ দেখা দিলে সবাই যেন নমুনা পরীক্ষা করতে যান। নমুনা পরীক্ষা কমতে কমতে দশ হাজারে পৌঁছেছে।

সর্বশেষ খবর, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা ও শনাক্ত কমেছে। তবে মৃত্যু বেড়েছে। শনাক্ত হয়েছেন দুই হাজার ৫২০ জন। মারা গেছেন ৩৮ জন।

Your browser doesn’t support HTML5

ঢাকা থেকে মতিউর রহমান চৌধুরীর রিপোর্ট