কভিড সংক্রমণের সনাক্তকরণ পরীক্ষা এখন বাড়িতে বসেই করা সম্ভব

কভিড-১৯ সংক্রমণের সনাক্তকরণ পরীক্ষা করতে যাওয়া মানে হল দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানো এবং অনেক সময় এই পরীক্ষার ফলাফল পেতে দেরি হতে পারে।এ বিষয়ে ভিওএর সংবাদদাতা ম্যাট ডিবল তার সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানাচ্ছেন যে, যদিও কভিডের টীকার ব্যবহার অনুমোদিত হয়েছে এবং প্রয়োগ শুরু হয়েছে, তবুও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলছেন যে, কভিড সংক্রমণের সনাক্তকরণ পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা দীর্ঘ সময় ধরেই চলবে। যুক্তরাষ্ট্রের সমগ্র জনসংখ্যার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পরীক্ষার ব্যবস্থা একটি অবিরাম চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে, আশার কথা এই যে, এখন একটি নতুন পদ্ধতির সাহায্যে বাড়িতে বসেই এই পরীক্ষা করা সম্ভব হবে।

জাতীয় অ্যালার্জি এবং সংক্রামক রোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডাঃ অ্যান্টনি ফাউচি বলেন, "নিজের ক্ষমতার মধ্যে বাড়িতে বসেই নির্দিষ্ট দ্রুত এবং সংবেদনশীল এই পরীক্ষার সাহায্যে মানুষ তাদের কভিড পরীক্ষার ফলাফল জানতে পারবে, এমনকি এর জন্য কোনও প্রেসক্রিপশনেরও প্রয়োজন নেই”।

সাম্প্রতিক প্রযুক্তিগত অগ্রগতিগুলি বোঝায় যে, বাড়িতে বসে করতে পারা এই পরীক্ষা এখন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এবং আমাদের নাগালের মধ্যে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন সংস্থা এই প্রথম এক ঘন্টারও কম সময়ে কভিদ সংক্রমণের ফলাফল্ নির্ধারণের এই পরীক্ষা অনুমোদিত করেছে। সুটার স্বাস্থ্য সংস্থার ডঃ জন চৌ এই চিকিৎসার ক্লিনিকাল স্টাডির নেতৃত্বে ছিলেন, তিনি বলেন, "এটি মূলত বাড়িতে একটি ল্যাব পরীক্ষা।" একটি জলীয় মিশ্রণে কতগুলি এনজাইম রয়েছে, যাতে নমুনা স্থাপন করা হলে এটি সেখানে জিনগত উপাদানগুলির পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে। সনাক্তকারী এটি সনাক্ত করতে পারে এবং তারপরে ৩0 মিনিটের মধ্যেই একটি ফলাফল প্রকাশিত হয়। ডাঃ জন চৌ আরও বলেন, “ক্লিনিকগুলিতে পরীক্ষাগুলি হলে অবশ্যই আমাদের সুবিধা হয়। খুব তাড়াতাড়ি ল্যাব থেকে কভিড পরীক্ষার ফলাফল জানতে পারলে চিকিৎসার জন্য দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়াও আমাদের পক্ষে সহজ হয়।"

সংস্থাটি এই বসন্তে যুক্তরাষ্ট্রে পরীক্ষার ব্যাপক বিতরণ করার পরিকল্পনা করেছে। পরীক্ষায় আর একটি সাফল্য আসে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে। ওকলাহোমা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন যে, কভিড-১৯ এ সংক্রামিত ব্যক্তির কাশির সঙ্গে একটি বিশেষ ধরণে্র শব্দ থাকে যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে সনাক্ত করা যায়। এমনকি যে সব রোগীর দেহে কভিড-১৯ এ সংক্রমিত হওয়ার কোন লক্ষণ থাকে না, তাদের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য।

ওকলাহোমা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ডঃ আলী ইমরান এই গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তিনি বলেন, "আমরা আমাদের প্রাথমিক অনুসন্ধানের উপর ভিত্তি করে একটি অ্যাপ তৈরির চেষ্টা করেছিলাম। অ্যাপটিতে প্রথমে সমস্ত ব্যাকগ্রাউন্ডের শব্দ থেকে কাশির শব্দটি কিভাবে আলাদা করতে হয় তারই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এটি প্রশিক্ষণের জন্য প্রায় ৫0,000 এর মত বিভিন্ন ধরনের কাশি ব্যবহার করা হয়েছিল এবং তারপরে প্রায় (একই পরিমাণ) কাশি ছাড়া শব্দগুলির ব্যবহার করা হয়েছিল।"

ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির অনুরূপ গবেষণায় দেখা যায় যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রায় শতকরা ১০০ ভাগ নির্ভুলতার সাথে একটি কভিড-১৯ কাশি সনাক্ত করতে পারে। ডঃ আলী ইমরান আরও বলেন, "এর বৈশিষ্ট্য হ'ল এই যে এটি স্বল্প ব্যয়ে করা যায়, এবং এটি পুনরাবৃত্তিযোগ্য, প্রতিদিন করা যায় এমনকি দিনে কয়েকবার পর্যন্ত করা যেতে পারে।"

২০২১ সালে, কভিড-১৯ এর জন্য পরীক্ষা করা আমাদের প্রতিদিনের রুটিনের আরও একটি অংশ হয়ে উঠতে পারে।

Your browser doesn’t support HTML5

ভিওএর সংবাদদাতা ম্যাট ডিবলের প্রতিবেদনটি পড়ে শোনাচ্ছেন জয়তী দাশগুপ্ত