আফগানিস্তানে যা চলছে, তা ঐ অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকী: ওয়াশিংটনে এক আলোচনায় বক্তারা

csis

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে 'সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ' এর উদ্যোগে “পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবাদ ও বিদ্রোহ” শীর্ষক এই আলোচনায় নিউইয়র্ক টাইমস এর সাংবাদিক কার্লোটা গল এবং আটলান্টিক কাউন্সিল এর ডিসটিংগুইশ ফেলো সুজা নেওয়াজ ছিলেন আলোচক। সন্ত্রাসবাদ এবং পাকিস্তান ও আফগানিস্তান বিষয়ে অভিজ্ঞ এই দুই আলোচক অতীত এবং বর্তমান সময়ের নানা তথ্য তুলে ধরেন। তাদের কথায় উঠে আসে সাম্প্রতিক শান্তি আলোচনার বিষয়টিও।

আফগানিস্তান নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস এর সাংবাদিক কার্লোটা গল বলেন, “এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি কেউ তেমন কিছু করেনি। আমেরিকা এবং নেটো চলে আসছে। সর্বোচ্চ এক লাখ ৪০ হাজার থেকে কমে, এখন আফগানিস্তানে ১০ হাজার বিদেশী সেনা রয়েছে। বিদেশী সৈন্য কমে যাওয়ায় আফগানদের অবশ্যই দায়িত্ব নিতে হয়েছে। এখন সন্ত্রাসীরা হুমকী দিচ্ছে। যা বিপদজনক হয়ে উঠছে। এখন আমরা সবকিছুর সত্যিকারের প্রভাব দেখতে পাচ্ছি। তালেবানদের কিছু অংশ আইসিসে চলে গেছে, সিরিয়া যেতে বিদেশী যোদ্ধারা অনেককে আকৃষ্ট করেছে, পাকিস্তানের উপজাতি এলাকায় থাকা বিদেশী যোদ্ধারা অনেকে আফগানিস্তানে এসেছে, আল-কায়দা দক্ষিনের দিকে কিছু করার চেষ্টা করছে। আমরা শুনেছি আমেরিকার বিশেষ অভিযানে সেখানে গিয়ে তা প্রতিহত করা চেষ্টা করেছে এবং বেশ কযেক দিন তুমুল যুদ্ধ হয়েছে। যখন একত্রিত হয়ে শান্তি আনার চেষ্টা চলছে, তখন আফগানিস্তান এবং ঐ অঞ্চলের নিরাপত্তার হুমকি স্বরুপ অনেক কিছুই ঘটছে।“

সদ্য পাকিস্তান থেকে ঘুরে আসা আটলান্টিক কাউন্সিল এর ডিসটিংগুইশ ফেলো সুজা নেওয়াজ বলেন, "আমি মনে করি সেখানে সতর্ক আশাবাদী দর্শন রয়েছে। এই পরিবর্তন -পাকিস্তানী সরকার সন্ত্রাসবাদ ও সহিংসতা মোকাবেলায় কি করছে সে কারনে নয়, বরং তার চেয়ে বেশী পাকিস্তানী সমাজের মৌলিক পরিবর্তন, যা পাকিস্তানী সেনাবাহিনী এবং সরকারকে চাপ দিয়েছে। যা দেশটিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। মানুষ তার ইচ্ছা অনুযায়ী বাইরে যাচ্ছে, কাজ করছে এবং সমাজ যে ইস্যু মোকাবেলা করছে, তা নিয়ে কথা বলছে। তারা সন্ত্রাসী কার্যক্রম নিয়ে ভীতু নয়। আমি লাহোরে একটি উৎসবে অংশ নিয়েছি। সেখানে আশংকার পূর্ববার্তা থাকলেও, শ্রোতা ছিল সব তরুন প্রজন্ম।

এরপর শুরু হয় প্রশ্ন উত্তর। এসময় বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন এলেও, প্রায় সব প্রশ্নকর্তাই জানতে চেয়েছেন, ঐ অঞ্চলে শান্তি আনতে দেশ দুটির সরকার কি করছে? এমন প্রশ্নে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট সম্পর্কে কার্লোটা গল বলেন, "আমি মনে করি, তিনি দেশটিকে সত্যিকার অর্থে ঐক্যবদ্ধ করতে চেষ্টা করছেন। দেশকে এক দিকে চালিত করা ব্যতিত, তালেবানকে পরাজিত করা কঠিন হবে।"

পাকিস্তান সরকার কি করছে এবং কি করা উচিত তা জানাতে গিয়ে সুজা নেওয়াজ বলেন, “সরকারের উচিত নেতৃত্ব নেয়া, কারন অভ্যন্তরীন বিনিয়োগ বাড়ছে না। বিদেশী বিনিয়োগ কমছে। দেশ থেকে অনেক অর্থ চলে যাচ্ছে।“

তিনি আরো বলেন—“পাকিস্তানের নীতি নির্ধারনে চীনের এখনো প্রভাবশালী ভূমিকা রয়েছে। এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কে বিশেষ কৌশল রয়েছে। তারা এখন চীন-পাকিস্তান বানিজ্যিক করিডোরের বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে। করিডোরের সুরক্ষায় ১০ হাজার দক্ষ নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়নের বিষয়ে সেনা বাহিনী সম্মত হয়েছে।“

সব মিলিয়ে ঐ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে- বাস্তব চিত্রটি বেশ জটিল বলেই মনে করেন দুই আলোচক।

Your browser doesn’t support HTML5

আফগানিস্তানে যা চলছে, তা ঐ অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকী: ওয়াশিংটনে এক আলোচনায় বক্তারা