আন্তর্জাতিক ফুটবল ফেডারেশন, ফিফার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে ফুটবল বিশ্বে তোলপাড় চলছে। বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে ঘুষ খাওয়া হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে নতুন প্রশ্ন উঠেছে। ফিফার বিতর্কিত সভাপতি সেপ ব্লাটারের পুণঃনির্বাচনের ক’দিনের মাঝেই এই ঘটনা ঘটল। আমাদের সংবাদদাতা, হেনরি রিজওয়েল জানিয়েছেন, এই সংকট সামলানোর জন্য ইউরোপীয় দেশগুলো এক জরুরী সভা করবে।
কিউবার জাতীয় দল আর নিউ ইয়র্ক কসমসের একটি প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচ দেখতে সোমবার হাভানায় এসে, ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফুটবলার পেলে, এই বিতর্ক নিয়ে নিজের মত জানিয়েছেন। ব্রাজিলকে তিনবার বিশ্বকাপ জেতানো পেলে, ফিফার সভাপতি সেপ ব্লাটারের পক্ষেই কথা বললেন। তিনি বলেন:
“আমি সেপ ব্লাটারকে আবার নির্বাচিত করার পক্ষেই ছিলাম। আমি নিজে ফিফার পরিচালক ছিলাম, আমি এর একটা অংশ। আর আমার মতে অভিজ্ঞ কাউকে পাওয়াই ভাল।”
গত সপ্তাহে, যুক্তরাষ্ট্র কয়েকজন ফিফা কর্মকর্তাকে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করে। রাশিয়াকে ২০১৮ আর ২০২২ এ কাতারকে বিশ্বকাপ আয়োজক বানাবার প্রক্রিয়া নিয়ে সুইস কর্মকর্তারা তদন্ত করছেন।
দুহাজার দশ সালে প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসেবে বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। দেশটির ফুটবল প্রধান, ড্যানি জর্ডান, রবিবার জানান, ২০০৮ সালে ফিফা উত্তর ও মধ্য আমেরিকা আর ক্যারিবিয় ফুটবল সংস্থাকে আশি লক্ষ ডলার দিয়েছিল। তবে তিনি দাবি করেন এটা কোন ঘুষ ছিল না বরং আফ্রিকার তৃনমূল ফুটবলের উন্নতির জন্যই এই অর্থ প্রদান করা হয়।
ক্রিড়া বিশ্লেষক ফিলিপ বার্কার জানান, আফ্রিকানরা এখনও দৃঢ়ভাবে ব্লাটারকে সমর্থন করে।
“বিশ্বকাপকে তিনি আফ্রিকায় এনেছেন। বিশ্ব ফুটবলকে এই এলাকায় আনার, তাদেরকে বিশ্বফুটবলের মধ্যমনি হবার সুযোগ করে দেবার জন্য ব্লাটার সবসময়ই আফ্রিকার সমর্থন পাবে।”
সিমাতা সিমাতা, জাম্বিয়ার সাবেক ফুটবল প্রশাসক, তিনি বলেন ব্লাটারের আমলে ফিফার বিনিয়োগে আফ্রিকার ফুটবলের অনেক লাভ হয়েছে।
“যদি ব্লাটার চলে যান, তাঁর সাথে এই প্রকল্প গুলোও বন্ধ হয়ে যাবে। আর আমরা আবার সেই আগের জায়গায় ফিরে যাবো। তাই আমরা চাই যতদিন পারা যায় ব্লাটারকে ক্ষমতায় রাখতে।”
তবে ক্ষমতা শুধু ফিফা সদস্যদের হাতেই না, এর কর্পোরেট স্পন্সরদের হাতেও। ঘটনাবলির উপর নজরে রাখছেন তারা, জানালেন বার্কার।
“ফুটবল মঙ্গলের প্রতীক। ফিফা আর এর দ্বারা যদি ফুটবল কলঙ্কিত হয় তাহলে স্পন্সররা নিজেদের সরিয়ে নেবে।”
ইউরোপীয় ফুটবল সংস্থা, ইউয়েফা, বার্লিনে ফিফার এই সংকট নিয়ে জরুরি বৈঠক করবে শুক্রবার। ইংল্যান্ড সহ কিছু সদস্য ফিফাকে বয়কট করার পরামর্শ দিয়েছে। বাকিরা বলছে একটি প্রতিদ্বন্দী টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে, যেখানে ইউরোপ আর দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো খেলবে।