সাধারণ মানুষের আবেগ অনুভূতি ব্যাবহার করে মানবাধিকার লংঘিত হচ্ছে

মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ২০১৭ প্রতিবেদন প্রতিবেদন অনুসারে ২০১৬ সালে বিশ্বের মানবাধিকার হুমকীর অন্যতম প্রধান বিষয় ছিল হুজুগে মানষিকতার সুযোগ গ্রহণ, সাধারণ মানুষের আবেগ অনুভূতির অপব্যাবহার। বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে প্রকাশিত ওই রিপোর্টে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন, শরণার্থী সংকটসহ সারা বিশ্বের বড় বড় ঘটনার উল্লেখ করা প্রতিবেদন করা হয়েছে বলে জানানো হয়। মারিয়ামা দিয়ালোর রিপোর্ট থেকে তথ্য নিয়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছি হিউম্যান রাইটস এ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট এ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদের সঙ্গে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ২০১৭ সালের ৬৮৭ পৃষ্ঠার মানবাধিকার রিপোর্টের ২৭তম প্রকাশনায় বিশ্বের ৯০টি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক কেনেথ রথ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বললেন এটি এমন একটি সময়ে প্রকাশ হচ্ছে যখন সারা বিশ্বে নেতৃত্বের বিকাশ ঘটছে ঠিকই; কিন্তু ওইসব নেতাদের অনেকেই সাধারণ মানুষের আবেগ অনুভূতির সুযোগ নিচ্ছেন।

“Nativism, xenophobia, racism, Islamophobia and misogyny অর্থাৎ সহানীয়তা, বিদেশাতংক, বর্নবাদ, ইসলামাতংক, নারীবিদ্বেষ; এর সবকিছুই এখন উর্ধমুখী। এসবের কারনে বিশ্ব এখন চরম ঝুঁকির মুখে”।

রথ বলেন চরম জঙ্গীবাদী হামলায় মানুষ আতংকগ্রস্থ, ভীত সন্ত্রস্ত। মানুষের মধ্যে আশংকা যে সরকার এবং অভিজাত শ্রেনী সাধারন মানুষের পরোয়া করছে না। সাধারন শ্রেনীর মধ্যে এসব নিয়ে এক ধরনের অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে যার সুবিধা নিচ্ছেন এক শ্রেনীর রাজনীতিবিদরা।

“ডনাল্ড ট্রাম্পের সফল প্রেসিডেন্সীয়াল প্রচারণা পরিচ্ছন্নভাবে পরমত সহিষ্ণুতার রাজনীতিকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। অভিবাসনকে তিনি ছকের মধ্যে ফেলেছেন, শরনার্থীদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, বংশ তুলে একজন বিচারকের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছেন, যৌন হয়রানীর বহু অভীযোগ অস্বীকার করেছেন নারীদের বিরুদ্ধেও কথা বলেছেন”।

তবে ট্রাম্প বলেছেন আমেরিকারনা ওবামা প্রশাসনের প্রতি অসন্তুষ্টু বলে তিনি জয়লাভ করেছেন। রথ বিশ্বাস করেন ট্রাম্পের পথ অন্যেরাও অনুসরন করবেন।

“ফ্রান্সে মেরিন লে পেন এবং নেদারর‍্যান্ডে গার্ট ওয়াল্ডার তার উদাহরণ। তবে তার বিরুদ্ধাচরণ দেখা যায় ব্রেক্সিট শিবিরে; হাঙ্গেরীতে ভিক্টর অর্বানের বক্তব্যে এবং পোল্যান্ডে জারোস্তাও কাজিনস্কির কথায়”।

ভার্জিনিয়া বিম্ববিদ্যালয়ের রাজনীতির অধ্যাপক ল্যারি সাবাতোর মতে; “ক্ষুদ্র গনতন্ত্র নিয়ে যাদের চিন্তা তাদের জন্যে এই পরিস্থিতি বিরক্তিকর বটে; কারন যুক্তরাস্ট্রে সচরাচর যা ঘটে অথবা গ্রেট বৃটেনের মত দেশে যা ঘটে তা ফ্রান্স জার্মানী বা অন্যত্র প্রতিফলিত হয়”।

রথ বলেন শক্ত শাষকের দেশ হিসাবে পরিচিত দেশসমূহ যেমন রাশিয়া, তুরস্ক, ফিলিপাইনস, মিশর এবং চীন ও তাদের একচ্ছত্র কতৃত্ব ক্রমে দায়বদ্ধতা ও আইনের শাষনের দিকে ধাবিত করছে।

“তুরস্কে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের স্বৈরাচারি শাষন—মিশরে সিসির প্রেসিডেন্সীয়াল ক্ষমতা, এক ধরনের আইন তৈরী করেছে যা ঠিক গতানুগতিক স্বৈরাচার নয়, নির্যাতনমূলক নয়; যা প্রেসিডেন্ট মুবারক –প্রেপিসেডন্ট পুতিনের অধীনে ঘটেছে। সমাবেশ করার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা দেয়া কিংবা মত প্রককাশের স্বাধীনতা না থাকা; নাগরিক সমাজের ক্ষেত্রে সীমা বেধে দেয়া এসব। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তাই অনুসরন করেছেন”।

রথ আফ্রিকার বেশকিছু নেতাদেরকে সাবধান করেছেন যারা তাদের ক্ষমতা সময় বাড়িয়েছেন এবং সাম্প্রতিক সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত থেকে নিজেদেরকে সরিয়ে নিয়েছেন।

হিউম্যান রাইটস এ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট এ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ কথা বললেন এ বিষয়ে বাংলাদেশর পরিস্থিতি সম্পর্কে।

Your browser doesn’t support HTML5

সাধারণ মানুষের আবেগ অনুভূতি ব্যাবহার করে মানবাধিকার লংঘিত হচ্ছে