প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প কেন জার্মানি সফরে যাচ্ছেন না? কেন জার্মানিকে তিনি উপেক্ষা করছেন? এর বিশেষ কী কারণ রয়েছে? সোজা-সাফটা প্রশ্ন তুলেছে জার্মান মিডিয়া ডয়েচে-ভেলে। তারা বলছে ফ্রান্সে জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন ট্রাম্প। এরপর তিনি যাবেন পোলান্ডে। কিন্তু তার সফরসূচিতে বার্লিনে চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মার্কেলের সঙ্গে সাক্ষাৎ নেই। বিশেষজ্ঞদের বরাতে জার্মান মিডিয়া বলছে, এটা অবন্ধুসুলভ আচরণ, বিস্তৃত কৌশলের অংশ। দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধের ৮০তম বার্ষিকী স্মরণে পোলান্ড সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। একদম দরজার কাছাকাছি এসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কেন জার্মানি যাচ্ছেন না? হোয়াইট হাউস কিছু না বললেও বিশ্লেষকরা বলছেন, নিশ্চয় এর পেছনে বিশেষ কোন কারণ রয়েছে। দুই বছর আগে হামবুর্গে জি-৭ সম্মেলনে মার্কেলের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল। বার্লিনে মার্কেলের অতিথি হননি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইস্যুর তালিকা অনেক দীর্ঘ। প্রতিরক্ষা ব্যয় থেকে শুরু করে ইরান ইস্যুতে জার্মানির অবস্থান, রাশিয়ার সঙ্গে নর্ড স্ট্রিম-২ গ্যাস পাইপলাইনে সমর্থন, বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্পে চীনকে নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে মারকেলের প্রতিরোধ। রাজনৈতিক ইস্যু ছাড়াও, ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভাল রসায়নও নেই। জার্মান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের যুক্তরাষ্ট্র বিষয়ক বিশেষজ্ঞ জোসেফ ব্রামল বলেন, ‘জার্মানির প্রতি এই তিরস্কার এবং গ্রিনল্যান্ড কেনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পটভুমিতে ট্রাম্পের ডেনমার্ক সফর বাতিল হচ্ছে তার-ট্রানজ্যাকশনাল লিডারশিপ স্টাইল। তিনি নিজেই লক্ষ্য ঠিক করেন, দাবি উত্থাপন করেন। কিন্তু অধীনস্তরা যদি তার চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয় তখন তাদেরকে সুবিধা দিয়ে পুরস্কৃত করেন বা শাস্তি দেন।’ জোসেফের মতে, এ জন্যই হয়তো জার্মানি ও ডেনমার্ককে শাস্তি দেয়া হচ্ছে।
জার্মানির সরকারি প্রচার মাধ্যম এআরডি’কে ওয়াশিংটনভিত্তিক হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের নিল গার্ডিনার বলেছেন, জার্মানির চেয়ে পোল্যাল্ডের বেশিই প্রভাব রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পিটারসন ইন্সটিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিকসের সিনিয়র ফেলো জ্যাকব কির্কগার্ড এআরডি’কে বলেছেন, ট্রাম্পের সফর ইউরোপকে বিভক্ত করার একটি সুস্পষ্ট প্রচেষ্টা। এটাই ট্রাম্প প্রশাসন খোলাসা করেছে। তারা এটাই বিশ^াস করে, তারা বহুত্ববাদের বিরোধী।
সুদওয়েস্ট প্রেস পত্রিকাকে জার্মান সরকারের ট্রান্স-আটলান্টিক সমন্বয়কারী পিটার বিয়ার বলেন, যদিও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষা করা উচ্চ অগ্রাধিকার। পাশপাশি এটাও খেয়াল রাখতে হবে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিষয়ে ওয়াশিংটনের অবস্থান তা এই ব্লকের ঐক্য ভঙ্গের জন্য হুমকি।
ব্রেক্সিট বিষয়ে যারা কট্টর অবস্থানে ট্রাম্প বার বার তাদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। বৃটেনের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে সমর্থন দিয়েছেন। এই যখন অবস্থা তখন জার্মানিতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রিচার্ড গ্রিনেল সম্প্রতি হুমকি দিয়েছেন জার্মানি থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহারের।
Your browser doesn’t support HTML5
ঢাকা থেকে মতিউর রহমান চৌধুরীর রিপোর্ট