জেনেভায় চলছে কেরী, ইউরোপীয়ন ও ইরানী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক

ইরানের পারমানবিক কর্মসূচী বিষয়ে সমঝোতা চুক্তির লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরীর সঙ্গে শনিবার জেনেভায় আবারো আলোচনা চলছে ইউরেপীয়ন এবং ইরানী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর। চেষ্টা চলছে ইরানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিলের পরিবর্তে তাদের পরামানবিক কর্মসূচীর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করার। ভয়েস অব আমেরিকার এল পেসিনের রিপোর্ট থেকে শোনাচ্ছেন সেলিম হোসেন:

Your browser doesn’t support HTML5

ইরানের পারমানবিক কর্মসূচী বিষয়ে সমঝোতা চুক্তির লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরীর সঙ্গ


শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয় আলাচনা। শনিবার ভোরেই আলোচনার টেবিলে বসেছেন জন কেরী এবং ইউরেপীয়ন ইউনিয়নের বিদেশ নীতি বিষয়ক প্রধান ক্যাথরিন এ্যাস্টোন। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য এবং জার্মানীর পররাষ্ট্রমন্ত্রীগণ। ইরানীয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মেদ জাভেদ জারিফের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।

জারিফ বলেছেন তাদের পারমানবিক কর্মসূচী নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ কমাতে তারা গ্রহণযোগ্য সমঝোতার জন্য প্রস্তুত; তবে তাদের বিরুদ্ধে আরোপীত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে হবে। শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যেই যে কোন চুক্তিতে উপনীত হবার সম্ভাবনা ছিল।

কিন্ত তা হয়নি। জন কেরী এবং অন্যান্য দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা তাই সফল করতে সবার আগেই টেবিলে বসেছেন। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী শনিবার সকালে মস্কো থেকে এসেছেন। আশা করা হচ্ছে চীনের একজন উপমন্ত্রীও আলোচনায় যোগ দেবেন। বিষয়টির সমাধান করতে এটি মোটামুটি একটি ছয় জাতি মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকে রূপ নিতে যাচ্ছে।

কর্মকর্তারা সমঝোতা বৈঠকের কিছু বিষয় উল্লেখ করেছেন; তবে ফান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরেন্ট ফবিয়া শনিবার ফ্রান্স ইন্টার রেডিওতে দেয়া সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেন:

তিনি বলেন, “চেষ্টা করা হচ্ছে ইরানের আরাকে’র নতুন পারমানবিক চুল্লির সক্রিয়তা বিলম্ব ঘটানোর, যা আগামী বছর সক্রিয় হওয়ার কথা রয়েছে। এই চুল্লি পারমানবিক বোমা তৈরীর উপাদান, প্লুটোনিয়াম, বিপুল পরিমাণ উৎপন্ন করতে সক্ষম। তিনি বলেন জাতিসংঘও চায় ইরান তার মজুদকৃত পারমানবিক বোমা তৈরীর আরেক উপাদান, ‘ইউরেনিয়াম’ কমিয়ে আনুক”।

তিনি বলেন ইরান তার বিরুদ্ধে আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিলের অনুরোধ জানিয়েছে এবং পররাস্টমন্ত্রীবর্গ চেষ্টা করছেন ইরানকেও সমান পরিমাণ ছাড় দিতে রাজী করাতে।

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ সাংবাদিকদের বলেছেন আলোচনায় বেশ অগ্রগতি হয়েছে; তবে সাফল্য আসবে কিনা তার কোন নিশ্চয়তা নেই।

তিনি বললেন, “এটা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয় যে আজকের মধ্যে কোন চুক্তিতে উপনীত হওয়া সম্ভব হবে কি না। আর যদি না হয়, আমরা চেষ্টা অব্যহত রাখবো আগামী সপ্তাহে করার জন্য”।

ইরানের পক্ষ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ছাড় না পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিষয়ে যুক্তরাস্ট্র প্রুতনিধি পরিষদের কিছু সদস্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন; এবং ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন যে ইরানের সঙ্গে সমঝোতায় বসা মন্ত্রীবর্গ ইরানের পক্ষ থেকে কোন ছাড় না পেয়েই ইরান যা চাচ্ছে তাতেই রাজী হচ্ছেন।

কর্মকর্তারা বলছেন এই চুক্তি সফল হলে তা হবে শুধুমাত্র একটি প্রথম পদক্ষেপ এবং যদি চুক্তি অনুসারে কাজ না হয় তবে আবারো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে এবং তা আরো কঠিনভাবে আরোপ করা হবে। সমালোচকরা বলছেন ইরানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্বিতীয়বার নিষেধাজ্ঞা আরো করাটা যতো কঠিন হবে, তার চেয়ে ইরানের পক্ষে পারমানবিক সমৃদ্ধকরন কর্মসূচী পুনরায় চালু করা অনেক সহজ হবে।