বৃহস্পতিবার ১৮ই ফেব্রুয়ারী, ২০২১ ‘পারসিভের‌্যান্স’ মঙ্গল গ্রহে অবতরণ করেছে

পৃথিবী ছাড়ার সাত মাস পরে, যুক্তরাষ্ট্রের নাসার মহাকাশযান ‘পারসিভের‌্যান্স’ সাফল্যের সাথে মঙ্গল গ্রহে অবতরণ করেছে। এ বিষয়ে ভিওএ'র আরশ আরাবাসাদির প্রতিবেদন থেকে জয়তী দাশগুপ্ত জানাচ্ছেন যে, রোভারের জন্য অবতরণ ছিল একটি অনেক বড় চ্যালেঞ্জ এবং অনেক নতুন নতুন আবিষ্কারের প্রতীক্ষায় রয়েছে এখন সারা পৃথিবী।

ফ্লোরিডার কেপ কানাভেরাল থেকে যাত্রা শুরু করার সাত মাস পরে, নাসার মহাকাশযান একটি সর্বাধুনিক রোভার ‘পারসিভের‌্যান্স’ মঙ্গল গ্রহের উপরিভাগে প্রায় অর্ধ বিলিয়ন কিলোমিটারের অর্থাৎ প্রায় ৩০ কোটি মাইলের একটি মহাকাশ যাত্রা সম্পন্ন করে। এর পরবর্তী উদ্দেশ্য হল, রেড প্ল্যানেট অর্থাৎ লাল গ্রহে আদিম প্রাণের লক্ষণগুলির জন্য অনুসন্ধান করা। আপাতত, লরি গ্লেজের মতো নাসার বিজ্ঞানীরা ‘পারসিভের‌্যান্স’ এর মঙ্গলগ্রহে অবতরণের পরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন।

নাসা গ্রহ বিজ্ঞান বিভাগের পরিচালক লরি গ্লেজ বলেন, “আমাদের পক্ষে সবচেয়ে বিপজ্জনক এবং চ্যালেঞ্জিং হল যখন মঙ্গলগ্রহের বায়ুমণ্ডলে রোভার প্রবেশ করে। মঙ্গল গ্রহের বায়ুমণ্ডল পৃথিবীর তুলনায় অনেক পাতলা।এটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের প্রায় এক শতাংশ, সুতরাং পৃথিবী থেকে সরাসরি মঙ্গলে কক্ষপথে ঢুকে মঙ্গলে নামার সময় রোভারের গতিবেগ থাকে অনেক বেশি, কিন্তু তারপরে সেই গতিকে কমিয়ে আনার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে বায়ুমণ্ডলের অভাব বোধ হয়। সুতরাং, এটা খুব চ্যালেঞ্জিং।"

নাসার ‘পারসিভের‌্যান্স’ হল সবথেকে বড় এবং ভারী রোভার, যা মঙ্গলগ্রহে পাঠানো হয়েছে।। এর পাশাপাশি প্রথমবারের মতো অন্য কোনও গ্রহে ‘ইনজেনুইটি’ নামে একটি হেলিকপ্টার উড়ানোর জন্য একটি পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এই যাত্রার মুখ্য উদ্দেশ্য হল মঙ্গলগ্রহের ভূমিতল জরিপ করা এবং এমন নমুনাগুলি সংগ্রহ করা যা আমাদের একটি পুরানো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে; “পৃথিবীর বাইরে কি কখনও আদিম প্রাণের অস্তিত্ব বিদ্যমান ছিল?”

নাসার থমাস জুরবুচেনের মতামত অনুযায়ী তবে এটাই সব নয়, এর থেকেও আর বেশি কিছু আছে।নাসা বিজ্ঞান মিশন অধিদপ্তর থেক্লে টমাস জুরবুচেন বলেন, “এ সম্পর্কে চমকপ্রদ ঘটনা হল এই যে, এটি কেবল মঙ্গলগ্রহে অবতরণ এবং সেখানে গিয়ে বিভিন্ন ধরণের অনুসন্ধানই নয়, পৃথিবীতে জীবন উদ্ভূত হয়েছিল এমন এক সময় থেকে আদিম জীবনের অস্তিত্ব এই মঙ্গলগ্রহে ছিল কিনা, এই রোভার তারই অনুসন্ধান করবে। এমনকি যদি আমাদের আশা অনুযায়ী সবকিছু ঠিকঠাক চলে, তবে এই রোভারটি যে নমুনাগুলি সংগ্রহ করছে বিশ দশকের শেষের দিকে সেগুলি সহ এটিকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা সম্ভবপর হবে।" .

নাসার পার্সিভিয়ারেন্স রোভারটি অন্তত এক মঙ্গলগ্রহের বছর বা দুটি পৃথিবী বছরের সমতুল্য সময় অতিবাহিত করার কথা রয়েছে, এবং এই রোভারটি ব-দ্বীপের মতো যে স্থানে অবতরণ করবে, কোটি কোটি বছর আগে সেখানে বিদ্যমান ছিল একটি প্রাচীন হ্রদ যার নাম হল জেজেরো ক্র্যাটার অর্থাৎ দৈত্যাকার গর্ত। এটি সেখানকার শিলা ও মাটিতে মাইক্রোফসিলের অনুসন্ধান করবে।

Your browser doesn’t support HTML5

আরশ আরাবাসাদির প্রতিবেদনটি পড়ে শোনাচ্ছেন জয়তী দাশগুপ্ত