ভারতীয় বংশদ্ভুত পাঞ্জু মেরালী নারী শিক্ষায় সাহায্য করে যাচ্ছেন

Turkish Police disperse Kurd protesters near Syria border, Monday, August 5, 2013

ভারতীয় বংশদ্ভুত পাঞ্জু মেরালী বহুদিন আফ্রিকার কঙ্গোয় বসবাস করার পর এখন ক্যালিফর্নিয়ার বাসিন্দা। সেখানে তিনি তার ৫০ বছরের জীবন সঙ্গিনী শিরীন মেরালীর মৃত্যুর পর, তারই নামে প্রতিষ্ঠা করেছেন শিরীন মেরালী ফাউন্ডেশন। পাঞ্জু মেরালী শিক্ষায় বিশ্বাস করেন। তিনি মনে করেন মানুষের জীবনে শিক্ষার অবদান অপরিসীম।

ওই ফাউণ্ডেশন, মেয়েদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাহায্য দিয়ে থাকে। বাংলাদেশেও তিনি ‘গ্রামীণ ফাউণ্ডেশন’ এর মাধ্যমে সাহায্য দিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি বললেন, ‘গ্রামীণ ফাউণ্ডেশন একটা সুপরিচিত প্রতিষ্ঠান এবং তাদের পক্ষ থেকেই আমার কাছে এই প্রস্তাব রাখা হয় । আসলে তারা ওয়াল স্ট্রিট পত্রিকায় আমার এই বৃত্তি কর্মসূচী সম্পর্কে প্রকাশিত নিবন্ধ থেকে এ বিষয়ে জানতে পারে । এবং আমার কাছে তাদের প্রস্তাব নিয়ে আসে’।

পাঞ্জু মেরালী বলেন ‘কোন মেয়ের যদি পড়াশোনা করার সঙ্গতি না থাকে, তাদেরকে এই বৃত্তি দেওয়া হবে । তাদের পড়াশোনার জন্য স্কলারশিপের অর্থ আছে । তারা যে কোন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে পারে । বিজ্ঞান, প্রকৌশল, গণিত, ব্যবসা – যে কোন বিষয়ে তাদের পড়ার জন্য বৃত্তি দেওয়া হবে’ ।

এই বৃত্তির টাকা কি ভাবে খরচ করা হয় সেই প্রশ্নের জবাবে পাঞ্জু মেরালী জানান ‘তা নির্ভর করে কার কি ধরণের প্রয়োজন । বইপত্র, অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র, পড়াশোনার জন্য যা দরকার সেই অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ করা হয়।’

কোন কোন দেশে তার প্রকল্পের অধীনে অর্থ সাহায্য দেওয়া হয়, সেই প্রশ্নের জবাবে পাঞ্জু মেরালী বলেন ‘বর্তমানে আমরা বেশ কয়েকটি দেশকে সাহায্য করছি। যেমন কঙ্গো, গুয়াতেমালা, ভারত, কেনিয়া, মেক্সিকো, মঙ্গোলিয়া, পাকিস্তান, পেরু, রাশিয়া, রুয়াণ্ডা, সোমালিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, তাজিকিস্তান, উগাণ্ডা ও জিম্বাবুয়ে।’

এইসব দেশে মেয়েদের সাহায্যের ওপর জোর দেওয়া হয় কারণ, ওই সব দেশে নারী – পুরুষের মধ্যে বিরাট পার্থক্য রয়েছে । তিনি সেইসব দেশে এই ব্যবধান কমিয়ে আনতে চান। তা অপসারণ করতে চান । মেয়েদের শিক্ষা দিলে, তারা ভবিষ্যতে তাদের ছেলেমেয়েদেরও শিক্ষিত করে তুলবে । এবং বংশানুক্রমে সেই ধারা অব্যাহত থাকবে ।

তার এই মানবিক কার্যক্রমে তিনি অনেক দেশকেই সাহায্য করে চলেছেন । এবং এই কাজের মাঝে তার জীবনে কোন না কোন স্মৃতি আছে যা তিনি ভুলতে পারেন না । স্মরণীয় ঘটনা আছে । সেই ধরণের স্মরণীয় ঘটনা তিনি বর্ণনা করলেন

‘আমি যখন প্রথম এই কর্মসূচী শুরু করি সেইসময়কার কথা । কঙ্গোতে আমার প্রথম কাজ ছিল। সেখানে ২শো থেকে আড়াইশো মেয়ে পড়াশোনা শুরু করে তারা আমাকে চিঠি লেখে আমি সত্যিই আনন্দে অভিভূত হয়ে যাই।’

পাঞ্জু মেরালী যে সব দেশে তার ফাউণ্ডেশনের মাধ্যমে সাহায্য করে চলেছেন, সেইসব দেশে কিন্তু তিনি কখনও যাননি । গ্রামীন ফাউণ্ডেশনের মত - বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সংগঠনের মাধ্যমে মেরালী ফাউণ্ডেশনের অর্থ সাহায্যে বাংলাদেশ ও দূর-দূরান্তের বহু দেশের অবহেলিত নারী সমাজ শিক্ষার আলোক বর্তিকায় উজ্জ্বল হয়ে উঠছে ।