সাংবাদিকদের স্বার্থ নিয়ে কর্মরত সংগঠন, ‘দা কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিষ্টস’ জানিয়েছে ২০১২ সাল ছিল সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর বছর। এ বছর বিশ্বব্যাপী ৭০জন সাংবাদিক নিহত হয় আর জেলে যেতে হয় দুই শতাধিক সাংবাদিককে। সংগঠনটি বলেছে সরকারী নজরদারী কর্মসূচী মুক্ত সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে একটি বিশাল অন্তরায়। জাতিসংঘ থেকে ভয়েস অব আমেরিকার মার্গারেট বেশিররের তথ্য নিয়ে, বাংলাদেশের গনমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে সাংবাদিক নাইমুল ইসলাম খানের সাক্ষাৎকার সহ এ বিষয়ে সেলিম হোসেনের প্রতিবেদন শুনুন:
সারা বিশ্বে গনমাধ্যমের অবস্থা নিয়ে প্রায় ৩০ বছর ধরে গবেষণা করছে ‘দা কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিষ্টস’ বা সিপিজে।
‘এ্যাটাকস অন দা প্রেস’ শিরোনামে গেল বুধবার প্রকাশিত সিপিজে’র রিপোর্ট বলেছে সারা বিশ্বে সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ন ও ভয়াবহ স্থান হচ্ছে সিরিয়া। গত বছর এখানে ২৯জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। সাংবাদিক অপহরণের ঘটনাও বৃদ্ধি পেয়েছে মারাত্মকভাবে। এই ভয়ে সিরিয়া থেকে কয়েক ডজন সাংবাদিক পালিয়ে গেছেন।
শুধু সিরিয়া নয়, সিপিজে’র মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা সমন্বয়কারী শেরিফ মানসৌরের বক্তব্য অনুসারে এই অঞ্চলে, বিশেষ করে ইরান, ইরাক ও মিশর, সাংবাদিকদের জন্য ভীষণ ঝুঁকিপূর্ন।
“তিনি বলছিলেন, সাংবাদিকদের বন্দী করার হিসাবে সারা বিশ্বের মধ্যে ইরান দ্বিতীয় বৃহত্তম অবস্থানে; আমাদের হিসাবে বছরের শেষ নাগাদ ৩৫জন সাংবাদিককে জেলে নেয়া হয়। আমরা এখনো অপেক্ষায় আছি প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানী গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়ে তিনি তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন কিনা তা দেখার জন্য”।
শেরিফ বললেন, মিশরে গনমাধ্যমের স্বাধীনতা চরমভাবে খর্ব করা হয়েছে। সাংবাদিক গ্রেফতার ও বন্দী করা’র বিষয়ে, সিপিজে’র শীর্ষ তালিকার নয় নম্বরে এখন মিশরের নাম এবং সাংবাদিকদের কাজের পরিবেশের ভয়াবহতার দিক দিয়ে সিরিয়া ও ইরাকের পর সিরিয়ার নাম।
২০১৩ সালে ইরাকে মারা গেছে ১০জন গণমাধ্যম কর্মী। অনেকেই ভয়ে দেশত্যাগ করেছেন। সিপিজে জানিয়েছে বাগদাদ ও কুর্দিস্তানে, কতৃপক্ষ অব্যহত রেখেছে সাংবাদিক গ্রেফতার, তাদের পরিচয়পত্র দেয়া থেকে বিরত থাকছে এবং সম্প্রচার কেন্দ্রসমূহে অব্যাহত রেখেছে অভিযান।
সিপিজে’র তথ্য অনুসারে গত বছর রাশিয়া এবং তুরস্কেও সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতনের হার বেড়েছে। ইউরোপ ও মধ্য এশিয়া সমন্বয়কারী নিনা অগ্নিয়ানোভা বলেন, সোচি অলিম্পিকের কারনে রাশিয়ার ওপর এখন আন্তর্জাকি মহলের চোখ। কিন্তু তাতেও গণমাধ্যমের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রনের মাত্রা কমেনি।
ছোট্ট দেশে প্রচুর পরিমাণে গণমাধ্যমের বিকাশ স্বত্বেও, কাজের স্বাধীনতা পুরোপুরি ভোগ করতে পারছেনা বাংলাদেশের সাংবাদিকরাও। ভয়েস অব আমেরিকায় টেলিফোনে দেয়া মন্তব্যে এমনটাই বললেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক, নিক অর্থনীতির সম্পাদক নাইমুল ইসলাম খান।
এদিকে, তুরস্ক পরপর দ্বিতীয়বারের ন্যায় সাংবাদিক গ্রেফতারের হিসাবে তালিকার শীর্ষে। ৪০জন সাংবাদিক গ্রেফতার ও বন্দী হয় গত বছর তুরস্কে। এর পরের অবস্থানে যথাক্রমে ইরান ও চীন।
এশিয়ায়, হংকং’কে একদা সাংবাদিকদের স্বর্গ বলা হলেও এখন আর সে অবস্থা নেই। চীন সম্পর্কে প্রতিবেদন তৈরীতে হংকং এর সাংবাদিকদের ওপর নানা প্রোকার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
আফ্রিকায়; ইথিওপিয়া, সোমালিয়া ও ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো এবং গাম্বিয়ায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এখন হুমকীর মুখে। এছাড়া তানজানিয়া, জাম্বিয়া, কেনিয়া, লাইবেরিয়া এবং দক্ষিন আফ্রিকায়’র মত গণতান্ত্রিক দেশসমূহেও গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় নেতিবাচক সূচক পরিলক্ষিত হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার ডিজিটাল নজরদারী কর্মসূচী’র বরাত দিয়ে সিপিজে তার প্রতিবেদনে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংগঠনের নির্বাহী সম্পাদক জোয়েল সিমন বলেছেন, মুক্ত ভাব প্রোকাশের অধিকার ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে জাতীসংঘের রয়েছে গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব।
Your browser doesn’t support HTML5
সারা বিশ্বে গনমাধ্যমের অবস্থা নিয়ে প্রায় ৩০ বছর ধরে গবেষণা করছে ‘দা কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিষ্টস’ বা সিপিজে।
‘এ্যাটাকস অন দা প্রেস’ শিরোনামে গেল বুধবার প্রকাশিত সিপিজে’র রিপোর্ট বলেছে সারা বিশ্বে সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ন ও ভয়াবহ স্থান হচ্ছে সিরিয়া। গত বছর এখানে ২৯জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। সাংবাদিক অপহরণের ঘটনাও বৃদ্ধি পেয়েছে মারাত্মকভাবে। এই ভয়ে সিরিয়া থেকে কয়েক ডজন সাংবাদিক পালিয়ে গেছেন।
শুধু সিরিয়া নয়, সিপিজে’র মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা সমন্বয়কারী শেরিফ মানসৌরের বক্তব্য অনুসারে এই অঞ্চলে, বিশেষ করে ইরান, ইরাক ও মিশর, সাংবাদিকদের জন্য ভীষণ ঝুঁকিপূর্ন।
“তিনি বলছিলেন, সাংবাদিকদের বন্দী করার হিসাবে সারা বিশ্বের মধ্যে ইরান দ্বিতীয় বৃহত্তম অবস্থানে; আমাদের হিসাবে বছরের শেষ নাগাদ ৩৫জন সাংবাদিককে জেলে নেয়া হয়। আমরা এখনো অপেক্ষায় আছি প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানী গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়ে তিনি তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন কিনা তা দেখার জন্য”।
শেরিফ বললেন, মিশরে গনমাধ্যমের স্বাধীনতা চরমভাবে খর্ব করা হয়েছে। সাংবাদিক গ্রেফতার ও বন্দী করা’র বিষয়ে, সিপিজে’র শীর্ষ তালিকার নয় নম্বরে এখন মিশরের নাম এবং সাংবাদিকদের কাজের পরিবেশের ভয়াবহতার দিক দিয়ে সিরিয়া ও ইরাকের পর সিরিয়ার নাম।
২০১৩ সালে ইরাকে মারা গেছে ১০জন গণমাধ্যম কর্মী। অনেকেই ভয়ে দেশত্যাগ করেছেন। সিপিজে জানিয়েছে বাগদাদ ও কুর্দিস্তানে, কতৃপক্ষ অব্যহত রেখেছে সাংবাদিক গ্রেফতার, তাদের পরিচয়পত্র দেয়া থেকে বিরত থাকছে এবং সম্প্রচার কেন্দ্রসমূহে অব্যাহত রেখেছে অভিযান।
সিপিজে’র তথ্য অনুসারে গত বছর রাশিয়া এবং তুরস্কেও সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতনের হার বেড়েছে। ইউরোপ ও মধ্য এশিয়া সমন্বয়কারী নিনা অগ্নিয়ানোভা বলেন, সোচি অলিম্পিকের কারনে রাশিয়ার ওপর এখন আন্তর্জাকি মহলের চোখ। কিন্তু তাতেও গণমাধ্যমের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রনের মাত্রা কমেনি।
ছোট্ট দেশে প্রচুর পরিমাণে গণমাধ্যমের বিকাশ স্বত্বেও, কাজের স্বাধীনতা পুরোপুরি ভোগ করতে পারছেনা বাংলাদেশের সাংবাদিকরাও। ভয়েস অব আমেরিকায় টেলিফোনে দেয়া মন্তব্যে এমনটাই বললেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক, নিক অর্থনীতির সম্পাদক নাইমুল ইসলাম খান।
এদিকে, তুরস্ক পরপর দ্বিতীয়বারের ন্যায় সাংবাদিক গ্রেফতারের হিসাবে তালিকার শীর্ষে। ৪০জন সাংবাদিক গ্রেফতার ও বন্দী হয় গত বছর তুরস্কে। এর পরের অবস্থানে যথাক্রমে ইরান ও চীন।
এশিয়ায়, হংকং’কে একদা সাংবাদিকদের স্বর্গ বলা হলেও এখন আর সে অবস্থা নেই। চীন সম্পর্কে প্রতিবেদন তৈরীতে হংকং এর সাংবাদিকদের ওপর নানা প্রোকার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
আফ্রিকায়; ইথিওপিয়া, সোমালিয়া ও ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো এবং গাম্বিয়ায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এখন হুমকীর মুখে। এছাড়া তানজানিয়া, জাম্বিয়া, কেনিয়া, লাইবেরিয়া এবং দক্ষিন আফ্রিকায়’র মত গণতান্ত্রিক দেশসমূহেও গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় নেতিবাচক সূচক পরিলক্ষিত হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার ডিজিটাল নজরদারী কর্মসূচী’র বরাত দিয়ে সিপিজে তার প্রতিবেদনে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংগঠনের নির্বাহী সম্পাদক জোয়েল সিমন বলেছেন, মুক্ত ভাব প্রোকাশের অধিকার ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে জাতীসংঘের রয়েছে গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব।