ডায়ানা ছিলেন সাধারণ মানুষের হৃদয়ের রাজকুমারী

আজ থেকে কুড়ি বছর আগে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান প্রিন্সেস ডায়ানা।ডায়ানার মানুষের হৃদয়ের রাজকুমারী হয়ে ওঠা এবং তার লেগেসির কথা বললেন শামীম আজাদ।

Your browser doesn’t support HTML5

ww PD

প্রিন্সেস ডায়ানা---ইংল্যান্ডের বধূ--- ব্রিটিশ রাজ পরিবারের বধূদের মধ্যে ইতিহাসে যেমন চিরস্মরণীয় তেমনি, কেবল মাত্র সে দেশেই নন বিশ্ববাসীর কাছে ছিলেন মানুষের হৃদয়ের রাজকুমারী হয়ে।

কেবলমাত্র সৌন্দর্য আর ফ্যাশনে ডায়ানা অদ্বিতীয় ছিলেন না সাধারণ মানুষের নয়নের মনি তাদের হ্রদয়ের রানী ছিলেন তিনি। তাইতো দুই দশক পরেও পৃথিবী জুরে মানুষ প্রিন্সেস ডায়ানাকে ঠিক একই আবেগ-ভালবাসা আর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে তাকে।

১৯৮১ সালের ২৯ জুলাই ১৯ বছরের এই তরুণী প্রিন্স চার্লসকে বিয়ে করে যেমন সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়ে ছিলেন তার চেয়েও বেশী মানুষ বিহ্বল হয়েছিল চমকে উঠেছিল তার মৃত্যুর খবরে। তার বিয়ের দৃশ্যের সম্প্রচার উপভোগ করে ছিল প্রায় ৭৫০ কোটি মানুষ। আর ১৬ বছর পরে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সম্প্রচার দেখে ছিলেন ২ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি।
রাজ পরিবারের পোশাকি নিয়মের বেড়া জাল ছিন্ন করে সাধারণ মানুষের মাঝে বেরিয়ে এসে ছিলেন প্রিন্সেস ডায়ানা। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গ্ল্যামারাস ডায়ানা ছিলেন আইকন। তাইতো আমরা প্রায়ই ডায়ানার জীবনের একটা দিক আলোচনা করি তার সৌন্দর্য আর ফ্যাশন আইকন হয়ে ওঠা। কিন্তু এসব স্বত্বেও তিনি ছুটে গেছেন মানুষের কাছে। তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র, শিক্ষা চিকিৎসা ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষকে সাহায্য করেছেন। বধূ হিসেবে নিজের চারপাশে ঐশ্বর্য আর ক্ষমতার বলয় গড়ে তোলেননি। বরং ১শর ওপরে দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। মানুষের কল্যাণে দেশ থেকে দেশান্তরে ছুটে বেড়িয়েছেন বিভিন্ন সমাজসেবা মূলক কাজ করেছেন। মানবসেবায় নিজেকে পুরোপুরি ঢেলে দিয়ে ছিলেন ডায়ানা।তার এই বিশাল লেগেসি তার দুই ছেলে কতটা ধরে রাখতে পারছেন--- সে বিষয়ে লেখক কবি এবং অনুবাদকশামিম আজাদ বিস্তারিত আলোচনা করেন।পুত্র অন্ত:প্রাণ ছিলেনডায়ানা। এক সাক্ষাতকারে মাকে স্মরণ করতে প্রিন্স হ্যারি বললেন মার সংগে প্রথম ডিজনী ওয়ার্ল্ড দেখতে গিয়ে ছিলাম---
প্রিন্স উইলিয়ামের বললেন, তার মায়ের অসমাপ্ত কাজগুলোকে তিনি এগিয়ে নিতে চান।
ডায়না ছিলেন লাজুক, নম্র কোমল স্বভাবের তাইতো মানুষেরহৃদয়কে স্পর্শ করে ছিলেন নিবিড় ভাবে।অপরদিকে মানুষের কাছে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে উদগ্রীব ছিলেন তিনি।

Your browser doesn’t support HTML5

ww PD


১৯৮০ দশকে ছোঁয়াচে রোগ ভেবে এইডস সম্পর্কে আতংক ছিল আকাশ ছোঁয়া। ঐ সময় ডায়ানা এইডস আক্রান্ত রোগীদের সাহায্যে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন।
১৯৯৭ সালের দিকে আফ্রিকায় ছুটে গিয়েছিলেন এইডসের ওষুধ আবিষ্কার, এইডস আক্রান্তদের সেবা দান ইত্যাদি কাজের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ দান করেন তিনি। নেলসন মেন্ডেলার সঙ্গে দেখা করেন, স্থল মাইন অপসারণের সংস্থার সংগে যুক্ত ছিলেন, সেন্টার পয়েন্টেরসঙ্গে কাজ করেছেন গৃহহীন দের জন্য।
ডায়ানার জীবনের আরেকটা দিক ছিল একেবারেই সাধারণ। বলতে গেলে দুঃখে ভরা। প্রিন্সেস হয়েও তার বিবাহিত জীবন ছিল প্রেম বঞ্চিত।
১৯৯২ সালের ৯ ডিসেম্বর ডায়ানা ও চার্লস আনুষ্ঠানিকভাবে আলাদা থাকার ঘোষণা দেওয়ার পর ডায়ানার ব্যক্তিগত জীবন অতিষ্ঠ করেতুলেছিল মিডিয়া। পাপারাডজিদের চোখ ফাঁকি দিতে লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকার চেষ্টা করলেও তাদের তাড়া খেয়েই অনেকটা যেন১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্ট ডায়ানা চিরনিদ্রায় চলে গেলেন। তবে তার মানবিক গুনের জন্য আজও তিনি সবার হৃদয়ের রাণী হয়ে আছেন।