তালিবানের প্রতি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ : আফগানদের নিরাপদে আফগানিস্তান ত্যাগ করতে দিন

মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস-গ্রিনফিল্ড নিউইয়র্ক সিটিতে জাতিসংঘে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি সম্পর্কে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভাষণ দেন। ১৬ আগস্ট, ২০২১।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ তালিবানদের সোমবার জানিয়েছে পরিষদ আশা করে যে তারা সকল আফগান নাগরিক এবং বিদেশি যারা আফগানিস্তান ছেড়ে যেতে চান তাদের যেন নিরাপদে সে দেশ ত্যাগ করতে দেওয়া হয়।

নিরাপত্তা পরিষদের ১৫টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে, রাশিয়া ও চীন ঐ খসড়া প্রস্তাবে সমর্থন দানে বিরত ছিল। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের লেখা ঐ প্রস্তাবটিকে অবশিষ্ট সদস্য-রাষ্ট্রগুলো সমর্থন করে।

পরিষদ তালিবানের ২৭শে আগস্টের বিবৃতি উল্লেখ করে যেখানে তালিবান বলেছিল যেসব আফগান স্থল বা বিমান পথে আফগানিস্তান ত্যাগ করতে চায় , তারা তাদের বাধা দেবে না। পরিষদ বলে তারা “আশা করে তালিবান সে কথা এবং তাদের দেওয়া অবশিষ্ট সব প্রতিশ্রুতিই রাখবে যার মধ্যে রয়েছে আফগান ও সকল বিদেশি নাগরিককে নিরাপদ ও নিয়ম মতো আফগানিস্তান ত্যাগ করতে দেওয়া”।

১৫ই আগস্ট তালিবান কাবুল দখল করার পর থেকে কাউল বিমান বন্দরে এক বিশৃঙ্খল চিত্র দেখা যায় যেখানে আফগানিস্তানের বহু নাগরিক দেশ থেকে পালিয়ে যেতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন।জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের দূত লিন্ডা টমাস-গ্রীনফিল্ড বলেন জুলাই মাসের শেষ দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র ১ লক্ষ ২২ হাজার আমেরিকান, আফগান এবং অন্যান্য দেশের নাগরিককে সে দেশ থেকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে।

কোন কোন আফগান নাগরিক আশংকা করছেন যে দোভাষী কিংবা অন্যান্য ভূমিকায় যারা আমেরিকান কিংবা নেটো বাহিনীর সঙ্গে কাজ করেছেন তারা সেই কারণে প্রতিশোধের শিকার হতে পারেন এবং নারী ও সংখ্যালঘুরা ভয় পাচ্ছেন যে ১৯৯০ ‘র দশকের শেষ এবং এই শতকের প্রথম দিকে তালিবান যখন প্রথম ক্ষমতায় আসে তখন তারা যে রকম দমন নিপীড়ন এবং মানবাধিকার লংঘন করেছিল, সে রকম আবার করতে পারে।

নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাভুটির পর যুক্তরাষ্ট্রের দূত সংবাদদাতাদের বলেন, ''আমরা তো আর গোটা দেশকে বিমানে করে নিরাপদ স্থলে তুলে নিয়ে যেতে পারি না। এই জায়গাটাতে কুটনীতিকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।''

নিরাপত্তা পরিষদ, বিমান বন্দরে “ঘৃণ্য হামলার” নিন্দে করেছে যাতে বহু আফগান এবং যুক্তরাষ্ট্রের ১৩ জন সৈন্য প্রণ হারান।এই বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে তথাকথিত ইসলামিক স্টেটের খোরাসান সম্পৃক্ত গোষ্ঠী আইসিস-কে।

নিরাপত্তা পরিষদ তার প্রস্তাবে আরও দাবি জানায় যে আফগানিস্তানের ভূমি যেন কোন দেশকে হুমকি কিংবা হামলার জন্য ব্যবহার করা না হয় কিংবা সন্ত্রাসীদের আশ্রয় বা প্রশিক্ষন দেয়ার জন্য অথবা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের পরিকল্পনা করতে বা তাতে অর্থায়নের জন্য যেন ব্যবহার করা না হয়।

তালিবান এবং আইসিস-কে উভয় গোষ্ঠীটি নিরাপত্তা পরিষদ দ্বারা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে।