যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের রিওয়ার্ড ফর জাস্টিস কর্মসূচীর আওতায় বাংলাদেশের লেখক-ব্লগার অভিজিৎ রায়ের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তথ্যের জন্য প্রায় ৫০ লক্ষ ডলার পর্যন্ত পুরষ্কার ঘোষণা করেছে।
Reward! Up to $5 Million for InformationOn Attack Against Americans in BangladeshIn 2015, terrorists killed Avijit Roy and wounded his wife, Rafida Ahmed, in Dhaka, Bangladesh.If you have info on those responsible for this heinous attack, text us at the number below. pic.twitter.com/cB26VVBKve
— Rewards for Justice (@RFJ_USA) December 20, 2021
২০১৫ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারি তারিখে ঢাকায় বইমেলার খুব কাছেই অভিজিৎ রায় এবং তার স্ত্রী রাফিদা বন্যা আহমেদের ওপর হামলাকারিরা প্রকাশ্যে আক্রমণ করে। চাপাতির আঘাতে অভিজিৎ অল্প সময়ের মধ্যেই মারা যান। তার স্ত্রী গুরুতরভাবে আহত হন।
রিওয়ার্ড ফর জাস্টিসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, "ঐ ঘটনার পর আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নামে একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয়। ঐ গোষ্ঠী যাদেরকে ইসলাম বিরোধী বলে মনে করে, তাদেরকে হত্যা করতে তরুণদের উষ্কে দেয়। ঐ ঘটনার অল্প পরেই ভারতীয় উপমহাদেশের আল-কায়েদা শাখা (এ কিউ আই এস)-এর নেতা অসিম ওমার এক ভিডিও বার্তায় দাবি করেন যে তাদের অনুসারীরা ঐ হামলা চালিয়েছে।" অসিম ওমার বর্তমানে প্রয়াত।
ঐ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের ১ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এ কিউ আই এস-কে বিদেশী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করে। যুক্তরাষ্ট্রের আইনের আওতায় তাদের সব সম্পদ বাতিল এবং তাদের সাথে এ দেশের কোনো নাগরিকের যে কোনো লেনদেন নিষিদ্ধ করা হয়।
ঐ খবর প্রকাশিত হবার পর অভিজিৎ-এর স্ত্রী রাফিদা বন্যা আহমেদ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেছেন, "অভিজিতের হত্যাকারীরা এখনও ধরা পড়েনি। ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৫-য় অভিজিৎ ও আমার ওপর যে হামলা হয়েছিলো, তার মূল পরিকল্পনাকারীদের সম্পর্কে তথ্যের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকার ৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে।"
অভিজিৎ রায় বাংলাদেশে উগ্র মৌলবাদসহ নানাবিধ সামাজিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে বরাবরই সোচ্চার ছিলেন। বাংলাদেশে ব্লগারদের ওপর বিভিন্ন সময় আক্রমণ এবং হয়রানির বিরুদ্ধে তিনি কথা বলতেন। তিনি বিজ্ঞান এবং যুক্তি দিয়ে কথা বলার পক্ষে ছিলেন।
অভিজিৎ রায়কে হত্যার দায়ে ২০২১ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের এক আদালত আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের পাঁচ সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড এবং একজন ব্লগারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে। ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় মামলার ছয় আসামির মধ্যে চার জন আদালতে উপস্থিত এবং বাকি দুইজন পলাতক ছিলেন। মৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন সেনাবাহিনী থেকে বহিষ্কৃত মেজর জিয়া, আকরাম হোসেন, আবু সিদ্দিক সোহেল, মোজাম্মেল হুসাইন ও আরাফাত রহমান।