জনবিস্ফোরণ পর্ব ১

শরীফ-উল-হক
ঢাকা রিপোর্টিং সেন্টার
সহযোগিতায়- ইউএসএআইডি এবং ভয়েস অফ আমেরিকা

পৃথিবীর আয়তন না বাড়লেও, দিনে দিনে বেড়ে চলেছে এর অধিবাসীর সংখ্যা। উন্নত অথবা উন্নয়নশীল সবদেশেই একটি সমস্যা - সেটা হল মানুষের চাপ। বাংলাদেশের মত তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে এই সমস্যা আরো প্রকট। মাত্র ৪,৪২৭ কি.মি. এর স্থলসীমার এই বাংলাদেশ, অর্থনৈতিক দিক দিয়ে অবস্থান অনেক পিছনে হলেও জনসংখ্যার দিক দিয়ে বিশ্বে নবম। জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ জনাব মোস্তাক এর মতে, একটি আদর্শ নগরীর কোন চাহিদাই পূরণ করতে পারছে না ঢাকা। বাসস্থান, গণপরিবহনসহ সব জায়গায় জনসংখ্যার অত্যধিক চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ঢাকা।

২০১১-১২ অর্থবছরে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ৮৪০ মার্কিন ডলারে পৌঁছলেও, জনসংখ্যার অত্যধিক চাপে জীবনের মান উন্নয়ন এবং মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা সরকারের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ছে। যার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ছে নিম্নবিত্ত শ্রেণীর উপর। এতে, একদিকে সমাজের মধ্যে বৈষম্য যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে অন্য দিকে জীবনযাত্রার মান কমে যাচ্ছে।

মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়া যেন, খুব স্বাভাবিক একটি ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে ঢাকার নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য। সঠিক স্বাস্থ্য-সেবা তাদের জন্য সোনার হরিণ। বেসরকারী হাসপাতালে চিকিতসাসেবা নাগালের বাইরে থেকে যায় নিম্ন আয়ের মানুষের। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো চেষ্টা করছে তাদের দুর্ভোগ কিছুটা লাঘবের। ঢাকার তেজগাঁও এলাকার একটি বস্তিতে বাস করেন রিহিমা বেগম। তার সাথে কথা বলে জানা গেল, গ্রামে খাবার এবং রোজগার না করতে পারার কারণেই ঢাকায় আসতে বাধ্য হয়েছেন।

বিশ্বের মেগাসিটিগুলোর অন্যতম ঢাকা এই চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। যার ফলে ধীরে ধীরে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে তিলোত্তমা এই নগরী। স্থপতি নাহিদ আক্তারের মতে জনসংখ্যার এই চাপ সামলাতে না পেরে কোন পরিকল্পনা ছাড়াই গড়ে উঠছে নগরী। ধীরে ধীরে পরিণত হচ্ছে ইট-কাঠ আর পাথরের স্তুপে।

বাংলাদেশে এখন প্রতিবছর ১.৩ শতাংশ হারে বাড়ছে মানুষ। বিশ্লেষকদের ধারণা, এই অবস্থা চলতে থাকলে ২০৫০ সাল নাগাদ এই দেশের জনসংখ্যা দাঁড়াবে ২৫ কোটিতে, যা আসলেই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াবে আমাদের জন্য।

Your browser doesn’t support HTML5

জনবিস্ফোরণ পর্ব ১