ভারতে সতর্কতার সঙ্গে স্কুল খুলছে, ওদিকে সংক্রমণ বাড়ার আশংকা

স্কুল খোলার প্রথম দিনে ভারতের নয়াদিল্লীর নদীয়ার একটি স্কুলের ক্লাসরুম। স্পেতেম্বর ১, ২০২১- এপি

অভিভাবকদের আশংকা ও করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রবণতা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষের অনুমতিতে প্রায় ১৮ মাস পর বুধবার থেকে ভারতে আংশিকভাবে কিছু কিছু রাজ্যে স্কুল খোলা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য বিষয়ক সতর্কতা অবলম্বন করে পুরো সেপ্টেম্বর মাস ধরে আরও ছয়টি রাজ্যে ক্রমশই স্কুল ও কলেজ খোলা হবে। নয়াদিল্লীতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকর্তাকে টিকা নেয়া নিশ্চিত করতে হবে এবং ক্লাসের পরিসর ৫০ শতাংশ ছোট করা হবে, দূরত্ব বজায় রেখে বসার ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং ডেস্কগুলো জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

রাজধানীর স্কুলে প্রথম পর্যায়ে ৯ থেকে ১২ গ্রেড পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসার অনুমতি দেয়া হচ্ছে, যদিও তা বাধ্যতামূলক নয়। অনেক অভিভাবক বলছেন তারা তাদের সন্তানদের স্কুলে দিতে চান না।

চলতি বছর ভয়াবহ করোনা সংক্রমণের পর ভারতে ধীরে ধীরে জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। বছরের শুরুর দিকে করোনা ভাইরাসের মারাত্মক বিস্তারে হাজার হাজার ভারতীয় মারা যান, সংক্রমিত হন। লকডাউনে থমকে যায় ভারতীয়দের জীবন। কিছু কিছু রাজ্যে গতমাস থেকে নির্দিষ্ট বয়সের ভিত্তিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।

মে মাসে যেখানে দৈনিক ৪ লাখেরও বেশী লোক নতুন করে সংক্রমিত হতেন তা এখন কমে গেছে। শনিবারে ভারতের দৈনিক করোনা সংক্রমণ রেকর্ড হয় ৪৬ হাজার, যা গত দুইমাসে সর্বোচ্চ ।

ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী ভারতে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম একটা বিশেষ সুবিধার বিষয় যেখানে প্রতি চারজনের মধ্যে মাত্র একজনের ইন্টারনেট সুবিধা আছে।

জানুয়ারি মাসে ১৬ হাজার শিক্ষার্থীর ওপর পরিচালিত আজিম প্রেমজি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরিপে দেখা যায় অনেকেই বিস্ময়কর পর্যায়ে শেখার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। ৯২ শতাংশ শিক্ষার্থীর ভাষা দক্ষতার অভাব রয়েছে, যেমন তারা একটি ছবির বর্ণনা করতে পারছে না কিংবা সহজ বাক্য লিখতে পারছে না। একইভাবে ৮২ শতাংশ শিক্ষার্থীর অংকের একেবারে মৌলিক দক্ষতা কম।

উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে গত ছয়মাস ধরে ওপরের ক্লাস খোলার পর বুধবার থেকে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থিদের ক্লাসে আসতে বলা হয়েছে। ৬ বছর বয়সী কার্ত্তিক শর্মা স্কুলের নতুন পোশাক পরে উৎফুল্ল ছিল। তার বাবা প্রকাশ শর্মা বলেন, “ভাইরাস থেকে সতর্ক থাকতে স্কুলের নেয়া ব্যবস্থায় আমি সন্তুষ্ট”।তিনি বলেন “ স্কুল যে ব্যবস্থা নিয়েছে তা একেবারে শীর্ষ পর্যায়ের”।

তবে সবাই ততোটা আস্থাবান নন। তোশি কিশোর শ্রীবাস্তব নামে একজন বলেন তিনি তাঁর ছেলেকে প্রথম শ্রেনীতে পাঠানোর আগে একটু অপেক্ষা করবেন। তিনি বলেন, “চিকিৎসকেরা ধারণা করছেন করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ আসবে। আর এই অবস্থায় বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানো ক্ষতিকর ”।