পাঞ্জাবে তার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার ঘটনা রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ও উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডুকে জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুধবার রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী। একান্ত বৈঠকে জানান, কীভাবে তার নিরাপত্তাকে লঘু করে দেখেছে পাঞ্জাবের কংগ্রেস সরকার। প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করেন উপ রাষ্ট্রপতি। বেঙ্কাইয়া প্রধানমন্ত্রীর কাছে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন পাঞ্জাবের ঘটনায়।
বুধবারই পাঞ্জাব ছাড়ার আগে মোদী ইঙ্গিত করেছিলেন, ওই ঘটনায় তার প্রাণ সংশয় হতে পারত। ভাতিন্দা বিমানবন্দর ছাড়ার মুখে পাঞ্জাবের অফিসারদের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, "আপনাদের মুখ্যমন্ত্রীকে বলে দেবেন যে আমি শেষ পর্যন্ত বেঁচে ফিরতে পেরেছি।"
প্রধানমন্ত্রীর ওই মন্তব্য থেকেই খানিক আভাস মিলেছিল পাঞ্জাবে অবরোধের জেরে তার কনভয় যেতে না পারার ঘটনাকে প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং নিরাপত্তার বিপন্নতা বলে দেখাতে চাইছেন।
পাঞ্জাবের ভাতিন্দায় কৃষকদের বিক্ষোভে আটকে পড়েন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার মুখ খুললেন ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়ন (ক্রান্তিকারী)-র নেতা সুরজিৎ সিং ফুল। তিনি বলেন, "ফিরোজপুরের সিনিয়র পুলিশ সুপার তাদের বলেছিলেন, রাস্তা খালি করে দিন। এই পথে প্রধানমন্ত্রী আসছেন। কিন্তু আমরা ভেবেছিলাম, তিনি মিথ্যা কথা বলছেন।"
এদিন সাংবাদিকদের ফুল বলেন, "ফিরোজপুরের এসএসপি আমাদের বলেছিলেন, অবরোধ তুলে নিন। এই পথে প্রধানমন্ত্রী যাবেন।" কৃষক বিক্ষোভে আটকে পড়ার পরে প্রধানমন্ত্রীর ফিরোজপুর সফর বাতিল করা হয়। পাঞ্জাবের হুসেইনিওয়ালা অঞ্চলে এক সভায় যাওয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রীর। সেখান থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে ফ্লাইওভারের ওপরে তার গাড়ি আটকে পড়ে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে পরে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় গুরুতর ত্রুটি হয়েছিল। রাজ্য সরকারের থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নি দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর যাত্রাপথ যে বদল করা হয়েছে, তা রাজ্য সরকারকে জানানো হয়নি। ওই দাবি উড়িয়ে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। তারা বলে, মোদী যাওয়ার আগে রাজ্য পুলিশকে একাধিকবার তার গতিবিধি সম্পর্কে জানানো হয়েছিল। পাঞ্জাব পুলিশের খোদ ডিজি বলেছিলেন, "ওই পথে কোনও বিপদ নেই।"
একটি সূত্রে জানা যায়, রাজ্য পুলিশ কৃষকদের জমায়েতের ওপরে কড়া নজর রেখেছিল। ওই কৃষকরা যাতে কোনওভাবে মোদীর সভায় বিঘ্ন ঘটাতে না পারেন, সেজন্য সতর্ক ছিল পুলিশ।
পাঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং কড়া ভাষায় রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কনভয় যেখানে আটকে পড়েছিল, "সেখান থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে পাকিস্তান সীমান্ত। মোদীর নিরাপত্তা রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাদের অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।"