মাসখানেক আগেই জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেছিলেন, বিতর্কিত কৃষিবিল প্রত্যাহারের কথা। এই বিল নিয়েই মূল আপত্তি ছিল কৃষকদের। ছিল আরও বেশ কিছু দাবিও। তবে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরেও আন্দোলন থামাননি কৃষকরা, জানিয়েছিলেন, সংসদে বিল প্রত্যাহার হলে তবেই তারা শেষ করবেন আন্দোলন।
দিন চারেক আগে খবর আসে, সরকারের তরফে বিক্ষোভরত কৃষকদের লিখিত প্রতিশ্রুতি মিলেছে। কৃষকদের বেশিরভাগ দাবিদাওয়াই কেন্দ্রীয় সরকার মেনে নেওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে।
সরকারের এই লিখিত প্রতিশ্রুতির তালিকায় ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের বিষয়টিও রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে। এর পাশাপাশি খড়কুটো পোড়ানো সহ সমস্ত পুলিশি মামলাগুলিও প্রত্যাহার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কেন্দ্র।
এর পরেই কৃষক আন্দোলন প্রত্যাহার করবেন বলে জানান তারা। ঘরে ফিরছেন কৃষকরা, তবে তার আগে করেছেন বিজয় মিছিল। শুক্রবারই আন্দোলন শেষ করে, মিছিল করে, কৃষকদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তামিলনাড়ুতে চপার দুর্ঘটনায় সিডিএস বিপিন রাওয়াত-সহ ১৩ জনের মৃত্যুর কারণে তা স্থগিত রাখা হয়েছে।
শনিবার গোছগাছ শুরু করেছেন কৃষকরা। আন্দোলন স্থলে ভেঙে ফেলা হচ্ছে অস্থায়ী আবাস। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে তারা কৃতজ্ঞ। দিল্লীর কড়া ঠান্ডায়, পুলিশি অত্যাচারের সময়ে তাদের সাহায্য করেছিলেন এলাকার মানুষ। জল, বিদ্যুৎ দিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
ফেরার আগে সেইসব মানুষদের সম্মান জানিয়ে ফুল ও মিষ্টি উপহার দিতে চেয়েছিলেন তারা। আবার কৃষকরা যখন ট্র্যাক্টর নিয়ে বাড়ি ফিরবেন তখন তাদের অভিনন্দন জানানোর জন্যও রাস্তার ধারে বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছিলো স্থানীয় উদ্যোগে।
এক বছর আগে কেন্দ্র সরকারের আনা কৃষি আইন নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় দেশজুড়ে। অবিলম্বে সেই আইন প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। এই দাবি সামনে রেখেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আন্দোলন শুরু হয়। সেই আন্দোলনের মধ্যেই মৃত্যু হয় বেশ কৃষকের। এমনকি কৃষকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলাও দায়ের করা হয়।
কৃষকদের কী কী দাবি ছিল-
- সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বা কেন্দ্রীয় সরকারী সংস্থাগুলির অধীনে এই প্রতিবাদের সময় নথিভুক্ত সমস্ত আন্দোলন-সম্পর্কিত মামলা প্রত্যাহার করতে হবে
- আন্দোলন চলাকালীন মারা যাওয়া আন্দোলনকারী কৃষকদের সমস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে
- সংসদে উত্থাপন করার আগে সরকারকে বিদ্যুৎ সংশোধনী বিলটি এসকেএম বা অন্যান্য কৃষক ইউনিয়নের সাথে আলোচনা করতে হবে
- কৃষিজাত দ্রব্য বিক্রির ক্ষেত্রে ন্যূনতম মূল্য (এমএসপি) নিয়ে আলোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করতে হবে। পাশাপাশি, এমএসপি যেমন চলছে তেমনই চলবে দেশজুড়ে