মিয়ানমার থেকে প্রাণে বাঁচতে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য ভৌগলিক সীমানা দুয়ার খুলে দিয়েছিল বাংলাদেশ। আর হৃদয় দুয়ার খুলে দিয়েছিল স্থানীয় অধিবাসীরা। এতেকরে পৃথিবীর সবচেয়ে সংকটাপন্ন এই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় হয়েছে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে। তবে বছর না পেরোতেই রোহিঙ্গা স্রোতের বিরূপ প্রভাব লেগেছে কক্সবাজারের আর্থসামাজিক বাস্তবতায়। সরাসরি ক্ষতির মুখে পড়েছে অন্তত লক্ষাধিক স্থানীয় অধিবাসী এবং কক্সবাজারের বনভূমি ও জীববৈচিত্র্য।এতেকরে রোহিঙ্গাদের প্রতি কিছুটা সহানুভূতি কমছে কক্সবাজারের মানুষের। অনেক্ষেত্রে বেড়েছে অসন্তোষ।তবে রোহিঙ্গা আগমণে অনেকের নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে, ব্যবসা বাণিজ্যের নতুন দুয়ার খুলেছে। যদিওবা এসব সুযোগ খুব বেশি নয়- সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নতুন করে ভাবছেন স্থানীয়দের জন্য। রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দকৃত অনুদানের ২৫শতাংশ স্থানীয়দের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তবে উখিয়া টেকনাফে প্রায় ৫ লাখ স্থানীয়দের বিপরীতে ১১লক্ষাধিক রোহিঙ্গা হওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে। তাই স্থানীয়রা চায় রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, সম্মানজনক ও সেচ্ছামূলক প্রত্যাবাসন।রোহিঙ্গাদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার হলুদিয়াপালং ইউনিয়নের বাসিন্দা তোফায়েল আহমেদ। তিনি তুলে ধরেছেন রোহিঙ্গাদের বিষয়ে তাঁর ব্যক্তিগত ও স্থানীয়দের অবস্থান।
প্রশাসনও স্থানীয়দের বিষয়টিকে খুবই গুরুত্বের সাথে নিয়েছেন। কেবল উখিয়া-টেকনাফের মানুষ নয়; রোহিঙ্গাদের কারণে পুরো কক্সবাজারের মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ। তাই জেলাবাসীর জন্য বিশেষ নজর দিচ্ছেন বলে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন।রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিষয়টা অনেকটা জটিল একটি প্রক্রিয়া বলে জানিয়েছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম। তাঁর মতে প্রত্যাবাসন না হওয়া পর্যন্ত রোহিঙ্গা ব্যবস্থাপনা খুবই সতর্কতার সাথে করতে হবে। স্থানীয়দের বিষয়টিও দেখতে হবে।রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্ব দরবারে উচ্চকিত প্রশংসা কুড়িয়েছে বাংলাদেশ। আর রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থাকবে বিশ্ব সম্প্রদায়। এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।
কক্সবাজার থেকে জানাচ্ছেন মুয়াযযেম হুসাইন শাকিল।