স্বামী নাফিস ফোন করে স্ত্রী সায়েদাকে তিন তালাক দিয়েছিল, মানতে চাননি ২২ বছরের সায়েদা। গিয়েছিলেন পুলিশের কাছেও। তারই খেসারত দিতে পাঁচ বছরের মেয়ের সামনেই সায়েদাকে গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারল তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এই ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের শ্রাবস্তী জেলায় ভারত-নেপাল সীমান্ত লাগোয়া গাদরা গ্রামে। মা’কে চোখের সামনে জ্বলতে দেখেছে পাঁচ বছরের মেয়ে ফতিমা। পুলিশকে ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বারে বারেই চমকে উঠছিল সে। পুলিশ শিশু কন্যার উদ্ধৃতিতে জানায়, ওই দিন সন্ধেয় তার বাবা নাফিস নমাজ সেরে বাড়ি ফিরে আসে। প্রথমে তার মা সায়েদাকে বেধড়ক মারধর করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বলে। সায়েদা রাজি না হলে শুরু হয় মার। ফতিমার কথায়, ‘‘আমার দাদু আজিজুল্লা, ঠাকুমা হাসিনা ও দুই পিসি গুড়িয়া আর নাদিরা মা’কে চুলের মুঠি ধরে টেনে নিয়ে যায়। এরপর নাদিরা ও গুড়িয়া মায়ের গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেয়। দাদু ও ঠাকুমা দেশলাই জ্বালিয়ে ছুড়ে দেয় মায়ের গায়ে। মা পুড়ে যায়।’’ সায়েদার বাবা রমজান খান পুলিশকে জানিয়েছেন, পণের জন্য মেয়ের উপর চাপ দিত তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। মারধরও করা হত। শ্রাবস্তীর পুলিশ সুপার আশিস শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, ভারতের আইন অনুযায়ী তাৎক্ষণিক তিন তালাক দেওয়া এখন শাস্তি যোগ্য অপরাধ। পণ চাওয়াও তাই। তার ওপরে খুন। সায়েদার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে নাফিস ও তার বাবাকে গ্রেফতার করে পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে খুন, পণের জন্য নির্যাতন, তিন তালাক-সহ একাধিক অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কলকাতা থেকে দীপংকর চক্রবর্তীর রিপোর্ট