ব্রাজিলের আমাজন জঙ্গলের ভয়াবহ আগুন বিশ্ববাসীকে শংকিত করে তুলেছে। পরিবাদী, গবেষক ও সংশ্লিষ্টরা ব্রাজিলের নতুন প্রেসিডেন্টের দোষ দিচ্ছেন এর জন্যে। সরকার সেনা বাহিনী নিয়োগ করেছে আগুন নেভাতে।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ রেইনফরেস্ট আমাজনের আগুনে সকলেই শংকিত। শনিবার ব্রাজিল কর্তৃপক্ষ সেনাবাহিনী নিয়োগ করেছে আগুন নেভাতে। বিমান থেকে পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা চলছে। আমাজনের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে জঙ্গলের অনেক বড় অংশ জুড়ে। দক্ষিন আমেরিকার বাতাসে মিশে যাচ্ছে আগুনের দুষিত ধোয়া। পুড়ছে গাছ পশু।
ফ্রান্সিসকো বারোসো স্থানীয় একজন কৃষক। বললেন এখানে প্রতি বছরই আগুন লাগে, “এ ধরনের ঘটনা প্রতি বছরই ঘটে। আমরা জানিনা এর জন্য দায়ী কে বা কারা। তবে এটা এখানকার নিয়মিত ঘটনা। এবং এর জন্যে কারো কখনো শাস্তি হয়না”।
পরিবেশবাদী সংগঠন এবং পরিবেশ গবেষকরা বলছেন কাঠ ব্যাবসায়ী আর পশু ব্যাবসায়ীরা এই আগুনের জন্যে দায়ী। তারা জমি ব্যবহারের জন্য জঙ্গল নিধন করতে চায়।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো তার নিজস্ব স্টাইলে আগুনের কারন ব্যাখ্যা করছেন, “আমার মনে হয়, আমার সন্দেহ হয় এটা এনজিওর মানুষদের কাজ। তাদের অর্থায়নে কম পড়েছে”।
বোলসোনারো আগুন নেভাতে সেনাবাহিনী নিয়োগ করেছেন ঠিকই; কিন্তু বলছেন অন্যান্য বছরের আগুনের মতোই- এবারের আগুনেও তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়নি।
গবেষকরা ইতিমধ্যেই হিসাব করে দেখেছেন প্রায় ৭৩ হাজার আগুনের ঘটনা ২০১৯ সালৈ যা গত বছরেরে চেয়ে ৮০ শতাংশ বেশী। ঐসব আগুনের বেশীরভাগই আমাজন অঞ্চলে।
বিশ্ব নেতারা টুইইটারে আগুনের প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন।
ফ্রান্সে জি-৭ সম্মেলনের আয়োজন করছেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রঁ। তিনি বলেছেন আমাজনের আগুন নেভাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে ফ্রান্স, “এ্যামাজন আমাদের সকলের উপকারে লাগে। আমরা সবাই ওই আগুনের উদ্বিগ্ন, শংকিত। প্রথমেই দরকার আগুন নেভাতে ব্রাজিলের সহযোগী করা। এরপর বনায়নেরর জন্যে অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে। স্থানীয় লোকজন ও এনজিওদেরকে সেখানকার উন্নয়ন কর্মকান্ডে অংশ নেয়ার সুযোগ দিতে হবে। কারন আমাজন হচ্ছে বিশ্বের বায়োডাইভারসিটি বা জীববৈচিত্র ও জলবায়ুর জন্যে একটি অনন্য সম্পদ।
এ্যামাজন রেইনফরেস্ট বা ঘনবর্ষণ বনাঞ্চল গোটা বিশ্বের অক্সিজেনের ২০ শতাংশের একক উৎপাদক এবং বিপুল পরিমান কার্বন ডাই অক্সাইড শুষে নেয়। শিক্ষাবিদ পরিবেবশবাদী ও গবেষকরা বলছেন এ্যামাজনের ক্ষতি হলে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে যুদ্ধ করা কঠিন হয়ে পড়বে।