চলে গেলেন বুদ্ধদেব গুহ। গতকাল গভীর রাতে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে জনপ্রিয় এই সাহিত্যিকের মৃত্যু হয়। তবে অগাস্ট মাসের প্রায় পুরোটাই কভিড সংক্রমণের পরবর্তী নানা জটিলতা নিয়ে অসুস্থ বুদ্ধদেব ওই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এপ্রিল মাসে করোনা সংক্রমণের কারণে এক মাসের উপরে তাঁকে হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল। বাড়ি ফিরে কিছুদিন ভাল ছিলেন, তার পর আবার হাসপাতালে। বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।কলকাতায় জন্ম হলেও ছোটবেলা কেটেছে বরিশাল আর রংপুরে।
এ যুগের অন্যতম রোমান্টিক লেখক, জঙ্গল প্রেমী ও শিকারি, বুদ্ধদেব গুহ গানও গাইতেন চমৎকার। বিশেষ করে পুরাতনী বাংলা গানে তাঁর দোসর খুঁজে পাওয়া মুশকিল ছিল। ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী ঋতু গুহকে। দশ বছর হল তিনিও মারা গিয়েছেন। ওঁদের দুই মেয়ে কলকাতার বাইরে থাকেন।
বুদ্ধদেব পেশায় ছিলেন নামী চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট কিন্তু লেখার মধ্যে দিয়ে তিনি বাঙালিদের জঙ্গলমুখী করে তুলেছেন।
তাঁর লেখা চরিত্র 'ঋজুদা' যেন তাঁরই প্রতিচ্ছবি। 'হলুদ বসন্ত', 'কোয়েলের কাছে', 'নগ্ন নির্জন', 'মাধুকরী', 'জঙ্গল মহল', ইত্যাদি নানা রকম বই মিলিয়ে প্রায় দেড়শ গ্রন্থের রচয়িতা বুদ্ধদেব গুহ।
ওঁর সমবয়সী আর এক বিশিষ্ট সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় মাত্র তিন দিন আগে স্ত্রীকে হারিয়েছেন, আজ পেলেন প্রিয় বন্ধুর মৃত্যু সংবাদ। শীর্ষেন্দু বললেন, "কষ্ট হচ্ছে।আমার তো ছাত্র জীবনের বন্ধু। একসঙ্গে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এম এ পড়েছি। তবে তারও অনেক আগে থেকেই কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসে আমরা আড্ডা মারতাম। আমার সঙ্গে চরিত্রগত নানা দিক থেকেই অমিল ছিল, কিন্তু তার জন্য আমাদের বন্ধুত্বে কোনও অসুবিধা হয়নি।"
বুদ্ধদেব গুহর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বার্তা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকার, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।