জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ আফগানিস্তানে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবর্তিত একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। যুদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আফগানিস্তানকে মানবিক বিপর্যয় এবং অর্থনৈতিক পতনের কাছাকাছি ফেলেছে।
যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোটের বিরুদ্ধে ২০ বছর যুদ্ধের পর তালিবান আগস্টের মাঝামাঝি আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করে।
তালিবান আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর থেকে পশ্চিমারা ৪ কোটিরও বেশি জন- অধ্যুষিত সাহায্য-নির্ভর সে দেশের জন্য সাড়ে নয় শ’ কোটি ডলার সমমূল্য সাহায্য এবং সম্পদ আটক করেছে, যেখানে কিনা এখন সে দেশের জনগণ কঠোর শীতের মুখোমুখি হচ্ছে।
বুধবার সর্বসম্মতিক্রমে পাস হওয়া নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, “এই প্রস্তাবটি শুধুমাত্র আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তা এবং অন্যান্য এমন কার্যক্রমের জন্য নেওয়া হচ্ছে যা মৌলিক মানবিক প্রয়োজনকে সাহায্য প্রদান করে এবং সে জন্য তালিবানের তালিকাভুক্ত সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সম্পদ জব্দ করা থেকে অব্যাহতি প্রদান করছে। পরিষদ এক বছরের মধ্যে তা পর্যালোচনা করবে।"
তালিবান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ এএফপিকে বলেছেন এই প্রস্তাবের অনুমোদন একটি "ভাল পদক্ষেপ"। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে অনুমোদনটি তা্লিবানের সাথে সম্পর্কযুক্ত সংস্থাগুলির উপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞাগুলি অপসারণ তরান্বিত করবে।
পৃথকভাবে, যুক্তরাষ্ট্র ট্রেজারি বিভাগ বুধবার কাবুলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাগুলি শিথিল করার জন্য কাজ করেছে, বলেছে যে কিছু আন্তর্জাতিক সাহায্য আফগানিস্তানে পাঠানো যেতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য তারা লাইসেন্স জারি করবে, যতক্ষণ না পর্যন্ত এটি যুক্তরাষ্ট্র দ্বারা নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্ত ব্যক্তিদের কাছে না পৌঁছায় ।
লাইসেন্সগুলি বিদেশে বসবাসকারী আফগানদের আফগানিস্তানে তাদের পরিবারের কাছে অর্থ পাঠাতেও অনুমতি দেবে।
যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের তালিবান এবং সংশ্লিষ্ট হাক্কানি নেটওয়ার্ককে সন্ত্রাসী হিসাবে চিহ্নিত করেছে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিকে তাদের নাগালে নেওয়া এবং বহিরাগত অর্থায়ন নিষিদ্ধ করেছে যা এই বছর যুক্তরাষ্ট্র বাহিনী প্রত্যাহারের আগে এবং পূর্ববর্তী সরকারের দ্রুত পতনের আগে দেশের অর্থনীতিকে সহায়তা প্রদান করে আসছিল।
বিশ্ব সম্প্রদায় আফগানিস্তানের বাজেটের ৮০ শতাংশ পর্যন্ত অর্থায়ন করে থাকে। বিদেশী অর্থের আরও বেশি করে নাগাল পাওয়া ছাড়া, অনেক অর্থনীতিবিদ ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, আফগান অর্থনীতি এই বছর প্রায় ৩০ শতাংশ সঙ্কুচিত হতে পারে, যা মানবিক সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।
[ এএফপি, এপি এবং রয়টার্স থেকে এই প্রতিবেদনে কিছু তথ্য এসেছে ]