রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) ভারত মহাসাগরে একটি যৌথ নৌ মহড়া শুরু করেছে ইরান।
সামুদ্রিক নিরাপত্তা জোরদার করতে ইরান এই মহড়ায় অংশ নিয়েছে বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, তাদের ১১টি জাহাজের সঙ্গে একটি ডেস্ট্রয়ারসহ তিনটি রাশিয়ান জাহাজ এবং দুটি চীনা নৌজাহাজ এই মহড়ায় অংশ নিয়েছে। ইরানের রেভ্যুলশনারি গার্ডও তাদের ছোট যুদ্ধজাহাজ ও হেলিকপ্টার নিয়ে এই মহড়ায় অংশ নেবে বলে খবরে জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কৌশলগত এই মহড়া ভারত মহাসাগরের উত্তরে ১৭ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলবে এবং এতে রাত্রিকালীন যুদ্ধ, উদ্ধার অভিযান এবং অগ্নিনির্বাপণ মহড়া অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
২০১৯ সাল থেকে এই দেশগুলোর মধ্যে এটি তৃতীয় যৌথ নৌ মহড়া। বৃহস্পতিবার শেষ হওয়া ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সাম্প্রতিক রাশিয়া সফরের সঙ্গে এই মহড়ার যোগসূত্র আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
“তেহরান এবং মস্কোর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতি এই অঞ্চল এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনের নিরাপত্তা বাড়াবে”, শুক্রবার রাশিয়া থেকে ফেরার পর রাইসি বলেন বলে জানিয়েছে ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনা।
সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আঞ্চলিক উত্তেজনার মধ্যে বেইজিং এবং মস্কোর সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সচেষ্ট তেহরান। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাশিয়া ও চীনা নৌবাহিনীর প্রতিনিধিদের ইরান সফরও বেড়েছে।
ইরান সাম্প্রতিক মাসগুলোতে নিয়মিত সামরিক মহড়া পরিচালনা করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর সঙ্গে ২০১৫ সালে বানচাল হওয়া পরমাণু চুক্তি পুনরুদ্ধার করতেই তাদের এই প্রচেষ্টা।
রাশিয়াও তার প্রতিবেশী রাষ্ট্র ইউক্রেনকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছে। দেশটি সেখানে এক লাখ সেনার এক বিশাল বহর পাঠিয়েছে। ওয়াশিংটন, কিয়েভ এবং তাদের মিত্ররা আশংকা করছে যে, এই সেনাবাহিনীকে ইউক্রেনে আক্রমণ করার জন্য ব্যবহার করা হবে।
রাশিয়া বৃহস্পতিবার ঘোষণা করে, তারা ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত বিভিন্ন কৌশলগত স্থানে মহড়ার লক্ষ্যে ১৪০টির বেশি যুদ্ধজাহাজ এবং ৬০টির বেশি যুদ্ধবিমান মোতায়েন করবে। ভারত মহাসাগরে ইরানের সঙ্গে যৌথ মহড়া ছাড়াও কৃষ্ণ সাগর, ভূমধ্যসাগর, উত্তর-পূর্ব আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরেও মহড়া হবে।