কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসের ভেতরে উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প থেকে পালিয়ে আসা একজন রোহিঙ্গা তরুণীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার মো. ফারুককে (৩০) কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আগামীকাল সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করবে পুলিশ।
শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে পুলিশ পৌরসভার বাটাখালী সেতুসংলগ্ন এলাকা থেকে ফারুককে গ্রেপ্তার করেছিল। তিনি উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ছগিরশাহকাটা গ্রামের বাসিন্দা আবু সৈয়দের ছেলে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গণি ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ফারুকসহ তিনজন মিলে একটি বাসের ভেতরে জোরপূর্বক ওই রোহিঙ্গা তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালান। এ ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে ফারুকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর পুলিশ বাসটি জব্দ করে আসামিদের ধরতে মাঠে নামে।
ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি বলেন, মো. ফারুককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আগামীকাল সোমবার আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করবে পুলিশ। রিমান্ড মঞ্জুর হলে ফারুককে জিজ্ঞাসাবাদ করে ধর্ষণচেষ্টার রহস্য উদঘাটন করা হবে। ভিকটিমকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) রাখা হয়েছে।
মামলার অপর দুই আসামিরা হলেন, বাসের সুপারভাইজার চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সোয়াজনিয়া দক্ষিণপাড়ার আমির উদ্দিনের ছেলে মাহবুব (৩২) ও চালক চট্টগ্রামের লোহাগড়া উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের রাজঘাট এলাকার জান শরীফের ছেলে শাহ এমরান (২৫)। হেলপাড় মো. ফারুককে মামলায় ৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ওই তরুণী উখিয়ার কুতুপালং (ক্যাম্প-১) আশ্রয়শিবির থেকে পালিয়ে কাজের সন্ধানে চট্টগ্রাম মহানগরে আসেন ছয় দিন আগে। কাজ না পেয়ে গত শুক্রবার সকালে হানিফ পরিবহনের একটি বাসে উঠে কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে ফিরছিলেন। ভাড়া দিতে না পারায় দুপুরের দিকে তাকে (তরুণীকে) চকরিয়া পৌরসভার বাস টার্মিনালে নামিয়ে দেওয়া হয়। বাস থেকে নেমে তরুণী টার্মিনালের এক পাশে দাঁড়িয়েছিলন। বিকেল ৩টার দিকে শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসের হেলপার মো. ফারুক তাকে কোথায় যাবেন জিজ্ঞাসা করেন। তরুণী উখিয়ার কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে যাবেন বললে তাকে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে আরেকটি খালি বাসে ওঠানো হয়। এরপর বাসটি পৌরসভার বাটাখালী সেতু এলাকায় থামে। এরপর বাসের ভেতরে চালক, সুপারভাইজার ও হেলপার মিলে তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালান। তখন তরুণী চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসেন। এ সময় জনতা ধাওয়া করে হেলপার মো. ফারুককে আটক করলেও বাসের চালক ও সুপারভাইজার পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। স্থানীয় লোকজন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ। এ সময় হেলপার মো. ফারুককে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।