ব্রিটেন মঙ্গলবার ঘোষণা করে যে তারা আগামী মাসে আফগানিস্তানের ক্রমবর্ধমান মানবিক সঙ্কট নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের যৌথ আয়োজক হতে চলেছে। সাহায্য সংস্থার কর্মীরা আশংকা করছেন যে চরম ক্ষুধায় সেখানে আগেকার ২০ বছরের লড়াইয়ের চাইতেও বেশি লোকের মৃত্যু হবে।
৪৪০ কোটি ডলার অর্থ সহায়তা তুলতে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে, জাতিসংঘ যে অর্থ সহায়তায় ২ কোটি ৩০ লক্ষ আফগান জনগণের কাছে খাদ্য, আশ্রয় ও স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান করবে। এই জনসংখ্যা দেশের সার্বিক জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি, জীবন বাঁচাতে তাদের এই সহায়তার প্রয়োজন।
ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস এক বিবৃতিতে জানান, "প্রয়োজনের মাত্রা সেখানে অপরিসীম, তাই নিষ্ক্রিয় থাকলে তার পরিনাম হবে ভয়াবহ"।
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে উচ্চ পর্যায়ের একটি ব্রিটিশ প্রতিনিধিদলের সফরের পর মঙ্গলবার এই ঘোষণা দেয়া হয়। আফগানিস্তানের চরম মানবিক সঙ্কটে ব্রিটেন কি করে সাড়া দেবে সেই আলোচনার জন্য প্রতিনিধি দল কাবুলে তালিবান নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
সাহায্য সংস্থাগুলো জানাচ্ছে গত বছর তালিবানের ক্ষমতা গ্রহণ এবং যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত আন্তর্জাতিক বাহিনী আফগানিস্তান ত্যাগ করলে যুদ্ধপীড়িত দেশটির মানবিক চাহিদা তুঙ্গে ওঠে।
যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমি দেশসমূহও সেখানে মানবিক নয় এমন সহায়তা বন্ধ করে দেয়, যা সেদেশের মোট উৎপাদনের ৪০ শতাংশ।
ওয়াশিংটন ৯৫০ কোটি ডলার সম পরিমানের আফগানিস্তানের বিদেশী সম্পদ আটক করে রেখেছে। তালিবান যেন সেই অর্থ না পায় সেজন্য এসব রাখা হয়েছে নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে।
শাস্তিমূলক এসব আর্থিক পদক্ষেপ ত্রাণ-নির্ভর আফগান অর্থনীতিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে, ক্রমবর্ধমান মানবিক সঙ্কটকে তীব্রতর করেছে, যে সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছিল ৪ দশকের সংঘাত ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে।
কোন দেশ তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয় নি, তবে বিশ্বের ভয়াবহ মানবিক সঙ্কট এড়াতে তালিবান গ্ৰুপের সঙ্গে ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততা বাড়ছে।
‘আইআরসি আফগানিস্তান’-এর পরিচালক ভিকি আইকেন বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক সঙ্কট সেখানে বিপর্যয়কর মানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক সঙ্কট মোচনে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপকে তাদের নীতি পর্যালোচনার আবেদন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, " আন্তর্জাতিক নীতির কারণে প্রতিদিন আফগান জনগণ শাস্তির শিকার হচ্ছেন এবং লক্ষ লক্ষ লোককে অনাহারের মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে"।
প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রশাসন মানবিক তৎপরতা অব্যাহত রাখতে কতকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে এবং সেই লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আইনে পরিবর্তন এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাশ করে তা বাস্তবায়িত করা হচ্ছে।