অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশে পৃথক দুটি হত্যা মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড–তিনজনের যাবজ্জীবন


বাংলাদেশে পৃথক দুটি হত্যা মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড। (ছবি- ইউএনবি)
বাংলাদেশে পৃথক দুটি হত্যা মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড। (ছবি- ইউএনবি)

বাংলাদেশের লক্ষীপুর জেলায় কৃষক হত্যা মামলায় পাঁচজনকে এবং ঢাকার আশুলিয়ায় গার্মেন্টস কর্মী হত্যা মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া আদালত তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও তিনজনকে খালাস দিয়েছেন।

লক্ষীপুরে কৃষক হত্যায় পাঁচজনের মৃত্যদণ্ড

লক্ষীপুরে কৃষক আকবর হোসেন হত্যা মামলায় পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া আদালত এ মামলায় তিন অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।

বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে লক্ষীপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লক্ষীপুর জজ কোর্টের সরকারি পিপি জসীম উদ্দিন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-জসিম উদ্দিন, নুর মিয়া, সফিকুর রহমান, মো. তৌহির হোসেন ও মো. রুবেল হোসেন।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন-জুয়েল, রাহেলা বেগম ও মোক্তার হোসেন। এর মধ্যে জুয়েল ও মোক্তার আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। খালাস পাওয়া তিনজন হলেন ওসমান কবিরাজ, উম্মে হাবিবা সুমাইয়া ও মোশারফ হোসেন মশু।

আদালত সূত্রে জানা যায়, জমিসংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জের ধরে ২০১৮ সালের ৭ সেপ্টেম্বর রায়পুর উপজেলার চরবংশী ইউনিয়নে কৃষক আকবর হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পর নিহতের ছেলে মো. তহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল ১১ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ৩১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষগ্রহণ ও দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ রায় দেন।

এদিকে, সাজাপ্রাপ্তদের আইনজীবী মঞ্চুর জিলানী এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।

আশুলিয়ায় গার্মেন্টস কর্মী হত্যায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড

ঢাকার আশুলিয়ার গার্মেন্ট কর্মী মো. তানিম হত্যা মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড ও প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বুধবার ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইসমত আরা এ রায় দেন।

দণ্ডিতেরা হলেন-গামেন্টস কর্মী সোহেল রানা, ফরহাদ হোসেন, মো. আশিকুর রহমান ও মো. নজরুল ইসলাম।

রায়ের বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২২ জুলাই সকাল ৯টায় নিখোঁজ হন গার্মেন্টস কর্মী তানিম। এর তিন দিন পরে আশুলিয়ার খাগান গ্রামের জঙ্গল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে পুলিশ লাশটি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ময়নাতদন্তে পাঠায়। তখন পুলিশ বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা করে।

অন্যদিকে, তানিমকে খুঁজে না পেয়ে তার স্ত্রী নূরুন্নাহার ১০ আগস্ট রাজধানীর কাফরুল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর তানিমের মা সাইদা সুলতানা দণ্ডিতদের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে তার ছেলেকে অপহরণ ও মুক্তিপন আদায়ের অভিযোগ এনে একটি মামলা করেন। এ মামলা এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য আশুলিয়া থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, দণ্ডিতরা তানিমের কণ্ঠ মোবাইল ফোনে ধারণ করে তার মায়ের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা আদায় করে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সোহেলকে গ্রেপ্তার করে। সোহেল ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে হত্যার কারণ এবং অংশগ্রহণকারী সবার নাম বলে দেয়। এ মামলায় ২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর অভিযোগ গঠন করা হয়।

রায় ঘোষণার পর তানিমের মা সাঈদা সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, “রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়”।

XS
SM
MD
LG