অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বইমেলার দ্বিতীয় দিনেও শেষ হয়নি নির্মাণ কাজ—অনুষ্ঠানমালা শুরু


মেলায় এখনো চলছে নির্মাণ কাজ। (ছবি: পুষ্পিতা রহমান)
মেলায় এখনো চলছে নির্মাণ কাজ। (ছবি: পুষ্পিতা রহমান)

বাংলা একাডেমির অমর একুশের বইমেলায় প্রথম দিকে সাধারণত জনসমাগম কম থাকে। তবে এবার তার ব্যতিক্রম ঘটেছে। দ্রুত আয়োজন করায় স্টলের সাজসজ্জা শেষ না হলেও প্রথম দিনেই বিপুলসংখ্যক গ্রন্থানুরাগী এসেছিলেন মেলায়। বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দ্বিতীয় দিনেও গ্রন্থানুরাগীদের সমাগমে ভাটা দেখা যায়নি। লোকসমাগম অব্যাহত থাকলেও নির্মাপর্বে বেশ ঢিলেঢাল ভাব দেখা গেছে। মাঠে আবর্জনা আর নির্মাণ সামগ্রী ছড়িয়ে আছে। অনেক স্টলের সাজসজ্জা, রং করার কাজ চলছে। বেশ কিছু স্টলে বই তোলাই হয়নি।

আগামী প্রকাশনীর স্টলে কথা হলো লেখক আসাদুজ্জামান আসাদের সঙ্গে। এই প্রকাশনা থেকে এসেছে তার গবেষণা গ্রন্থ “বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ইতিহাস”। তিনি বললেন, “এবার প্রথম দিন থেকেই মেলায় প্রচুর দর্শক আসছে এটা খুবই ভালো লক্ষণ। যদিও এখনো তেমন বিক্রিবাট্টা শুরু হয়নি। তবে পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে এবার মেলা বেশ ভালোই হবে।”

মেলায় প্রবেশের সময় স্বাস্থ্যবিধি হাত সানিটাইজ করা হচ্ছে। (ছবি: পুষ্পিতা রহমান)
মেলায় প্রবেশের সময় স্বাস্থ্যবিধি হাত সানিটাইজ করা হচ্ছে। (ছবি: পুষ্পিতা রহমান)

বইমেলার একটি সুদূরপ্রসারী বিস্তারিত পরিকল্পনা দরকার। ভয়েস অফ আমেরিকার কাছে বললেন, আগামী প্রকাশনীর সত্ত্বাধিকারী ও বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সাবেক সভাপতি। তিনি বললেন, প্রতি বছর শেষ সময় এসে তরিঘরি করে মেলা করা হয়। এই অবস্থায় ভালো কিছু হচ্ছে না। সে কারণে একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা দরকার বলে মনে করেন তিনি।

এদিকে মেলায় নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ না হলেও নিয়মিত অনুষ্ঠানগুলো বুধবার থেকে শুরু হয়েছে। তথ্যকেন্দ্রে নতুন বইয়ের নামও জমা পড়েছে ১৮টি।

মূলমঞ্চের আলোচনা

মেলার দ্বিতীয় দিন বুধবার বিকলে বইমেলার মূলমঞ্চে আলোচনা বিষয় ছিল “স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ”। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুভাষ সিংহ রায়। আলোচনা করেন অধ্যাপক মাকসুদ কামাল ও লেখক-গবেষক ফারুক মঈনউদ্দীন। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সংসদ সদস্য এইচ এন আশিকুর রহমান।

মেলায় একটি প্যাভিলিয়ন। (ছবি: পুষ্পিতা রহমান)
মেলায় একটি প্যাভিলিয়ন। (ছবি: পুষ্পিতা রহমান)

স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। তিনি বলেন, “একুশে বইমেলার অনিবার্য অংশ বাংলা একাডেমির মূল মঞ্চের একুশের আলোচনা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আমরা আশা করি এবারের আলোচনা-পর্ব এবং সাংস্কৃতিক আয়োজন সকলের অংশগ্রহণে প্রাণবানও সার্থক হয়ে উঠবে।”

প্রাবন্ধিক সুভাষ সিংহ রায় বলেন, “বঙ্গবন্ধু মাত্র ১৩১৪ দিনের রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশকে ভিত্তি দিয়ে গেছেন। সেই অল্প সময়েই বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে রেখে গেছেন। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ এখন সবার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।”

আলোচকেরা বলেন, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অবিশ্বাস্য কিন্তু সত্য। বাংলাদেশের উন্নয়নে যারা একদিন সংশয় প্রকাশ করেছিলেন, তারা আজ ভ্রাত্ম প্রমাণিত হয়েছেন। বাংলাদেশ শুধু অর্থনৈতিক দিক দিয়েই এগিয়ে যায়নি, চিন্তা ও পরিকল্পনার দিক থেকেও উন্নয়নের ধারায় অগ্রগামী হয়েছে। বিদেশি বিশেষজ্ঞদের ওপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে দেশে মানবশক্তির উন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে। উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত রাখতে হলে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে এইচ এন আশিকুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশ যে উন্নয়নের ধারায় আজ অনেকদূর অগ্রসর হয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।”

পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন কবি নাসির আহমেদ, হালিম আজাদ ও মোহাম্মদ সাদিক। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী আশরাফুল আলম, লায়লা আফরোজ ও ডালিয়া আহমেদ। সংগীত পরিবেশন করেন মহিউজ্জামান চৌধুরী, তিমির নন্দী ও তানজিনা করিম স্বরলিপি।

লেখকদের কথা

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশে মেলার “লেখক বলছি” মঞ্চে এদিন থেকে শুরু হয়েছে নিজেদের বই নিয়ে লেখকদের আলোচনা পর্ব। এদিন আলোচনায় অংশ নেন জসীম মল্লিক, নাহার মনিকা ও আদনান সৈয়দ।

XS
SM
MD
LG