অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

জার্মান চ্যান্সেলর শোলজ বলেছেন, ইরান চুক্তির জন্য “এখনই উপযুক্ত সময়”


জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ। (ফাইল ফটো- এপি)
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ। (ফাইল ফটো- এপি)

জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বলেছেন যে, বিশ্ব শক্তির সঙ্গে ইরানের ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি রক্ষা করা যায় কি না তা নির্ধারণ করার জন্য "এখনই উপযুক্ত সময়" এবং ইরানের নেতৃত্বকে যেকোনো একটি দিক বেছে নিতে হবে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যদিও বলেছেন যে, নমনীয়তা দেখানো পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর নির্ভর করে এবং "বল এখন তাদের কোর্টে"।

ইরানের আলোচকেরা এবং চুক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্য পক্ষগুলো, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও চীন, ভিয়েনায় চুক্তিটি পুনরুদ্ধার করতে সচেষ্ট। এটি পারমাণবিক কর্মসূচি স্থগিত করার বিনিময়ে ইরানকে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি দেবে।

২০১৮ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে নাম প্রত্যাহার করায় যুক্তরাষ্ট্র পরোক্ষভাবে আলোচনায় অংশ নিয়েছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, তিনি চুক্তিতে আবার যোগ দিতে চান।

ট্রাম্পের সময় যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর ভারী নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করে। চুক্তি লঙ্ঘন করে তেহরান বিশুদ্ধ ও বেশি পরিমাণ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে। একই সঙ্গে মজুদও বাড়ায়। চুক্তিটি আনুষ্ঠানিকভাবে জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন বা জেসিপিওএ নামে পরিচিত।

শনিবার বার্ষিক মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের শোলজ বলেন, গত ১০ মাসে ইরানের পারমাণবিক আলোচনা অনেক দূর এগিয়েছে এবং "আলোচনার উপসংহার টানার জন্য সমস্ত উপাদান প্রস্তুত"। তবে তিনি ইরানের মজুত বাড়ানো এবং জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার পর্যবেক্ষকদের পরিদর্শনে বাধা প্রদানের জন্য ইরানের সমালোচনাও করেন।

"চুক্তিটি সফল করার সুযোগ রয়েছে আমাদের, যার ফলে নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার করা সম্ভব হবে", শোলজ বলেন। "একই সঙ্গে, এমনো হতে পারে যদি আমরা খুব দ্রুত সফল না হই, তাহলে আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার হুমকিও রয়েছে”।

জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, ইরানের নেতৃত্বকে একটি সিদ্ধান্তে আসতে হবে, “এখনই উপযুক্ত সময়”।

কয়েক ঘন্টা পরে একই মিউনিখ সম্মেলনে এক বক্তৃতায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাবদুল্লাহিয়ান বলেন, “আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি উপযুক্ত সিদ্ধান্তে পৌছাতে প্রস্তুত—যদি কি না অন্য পক্ষ প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়”।

আমিরাবদুল্লাহিয়ান জোর দিয়ে বলেন, একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য “আমরা তাড়াহুড়ো করছি”। কিন্তু তিনি স্পষ্ট করে বলেন, পুনরুদ্ধার করা চুক্তির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি কী হবে সেটা দেখার বিষয়।

“আমরা এর আগে কখনোই চুক্তির বিষয়ে এত ইতিবাচক ছিলাম না”, তিনি বলেছিলেন। “এখন পশ্চিমা পক্ষকে তাদের উদ্যোগগুলো উপস্থাপন করতে হবে এবং নমনীয়তা দেখাতে হবে...তারা এখন পর্যন্ত কোনো নমনীয়তা দেখায়নি”।

ইরান এখন পর্যন্ত সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকার করেছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইঙ্গিত দেন, যুক্তরাষ্ট্র কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলে বা বিদেশি ব্যাংকগুলোতে আটকে থাকা ইরানের কিছু সম্পদ অবমুক্ত করলেই সরাসরি আলোচনা অর্থবহ হবে।

ইরান দীর্ঘদিন ধরে জোর দিয়ে বলে আসছে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। কিন্তু ২০১৫ সালে চুক্তির অধীনে দেশটি কিছু বিধিনিষেধ থেকে সরে গেলে তার চিরশত্রু ইসরাইল এবং বিশ্বশক্তি শঙ্কিত হয়ে পড়ে।

তেহরান তখন থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা শুরু করে। একটি পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য প্রয়োজন পড়ে ৯০ শতাংশ বিশুদ্ধতা।

XS
SM
MD
LG