রোহিঙ্গা মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার কর্তৃক গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলাটি খারিজ করতে মিয়ানমার যে আইনি প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তা প্রত্যাখ্যান করার জন্য বুধবার জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করেছে গাম্বিয়া।
গাম্বিয়া ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলাটি দায়ের করে।তাদের যুক্তি ছিল, মিয়ানমার জান্তা ২০১৭ সালের অভিযানের সময় রোহিঙ্গাদের উপর যে নিপীড়ন চালায়, তা ১৯৪৮ সালের গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘনের শামিল।গাম্বিয়ার আর্জি ছিল, ঐ অভিযানটি অবশ্যই গণহত্যার মতো মারাত্মক অপরাধ এবং বিশ্ব আদালতে মিয়ানমারকে অবশ্যই এর জন্য জবাবদিহি করতে হবে।
সেসময় কিছু রোহিঙ্গা বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হামলার পর, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে, তাদের কথায়, শুদ্ধি অভিযান শুরু করে।দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী নির্বিচারে রোহিঙ্গা নারী ও মেয়েদের গণধর্ষণ ও হত্যা তাণ্ডব চালায়, এবং হাজার হাজার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়।এতে প্রায় ৭ লক্ষ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠী প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।জাতিসংঘের একটি তথ্য সংগ্রাহক মিশন এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, দমন অভিযানের সময় "গণহত্যামূলক কাজ" সংঘটিত হয়েছিল।
মিয়ানমারের জান্তা তাদের বিরুদ্ধে আনিত মামলাটি খারিজ করার দাবি করার দু’দিন পর, গাম্বিয়ার আইনজীবীরা মিয়ানমারের সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করার জন্য আদালতকে অনুরোধ করে।জান্তার যুক্তি ছিল, পশ্চিম আফ্রিকার দেশটি "কারও প্রক্সি" নয় এবং মামলাটি রুজু করার জন্য তাদের কোনও আইনি ভিত্তি নেই।কারণ এটি ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা দ্বারা দায়ের করা হয় এবং আদালত কেবল ওই দেশগুলির মধ্যেই করা কোন মামলা আমলে নিতে পারে।
গাম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল এবং বিচার মন্ত্রী দাউদা জালো জান্তার ওই যুক্তির খণ্ডন করে বলেন, "এটি গাম্বিয়া এবং মিয়ানমারের মধ্যে একটি বিরোধ।"
মিয়ানমারের মামলা খারিজ করার আবেদনের রায় দিতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে বিচারকদের।
মিয়ানমারের আইনি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রী কো কো হ্লাইং।যিনি গত বছর সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচির স্থলাভিষিক্ত হন।
[ এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস এবং রয়টার্স থেকে নেয়া ]।