অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশে করোনা টিকার সকল ডোজই চালু থাকবে—জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক


স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক

বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, “ভয়ের কোনো কারণ নেই, আজকের পরও প্রথম ডোজসহ সকল ডোজই চালু থাকবে। এ নিয়ে বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ নেই। আমাদের কাছে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত টিকা রয়েছে। যত টিকাই লাগে আমরা দিতে পারব। টিকা অতিরিক্ত হয়ে গেলে আমরা অন্য যেসব দেশ টিকা পায়নি, তাদের দিয়ে দিতে পারব।”

শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা তিনটার দিকে মানিকগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়ন পরিষদে গণটিকা কার্যক্রম অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

জাহিদ মালেক বলেন, “আজকের বিশেষ এই টিকা কার্যক্রম লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। গণটিকার আজকের কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আজকের এই বিশেষ টিকা কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে দেশে টিকা গ্রহণকারীর সংখ্যা হবে প্রায় ১২ কোটি।”

তিনি আরও বলেন, “দেশে টিকা নেওয়ার কারণে করোনায় সংক্রমিত মানুষের মৃত্যুর হার কমেছে। সংক্রমণও দিন দিন কমে যাচ্ছে। ধীরে ধীরে দেশ করোনার থাবা থেকে দেশ মুক্ত হবে।

গণটিকাদানের মেয়াদ আরও দুই দিন বাড়ল

বাংলাদেশে প্রথম ডোজের গণটিকাদান কর্মসূচির মেয়াদ আরও দুই দিন বাড়ানো হয়েছে। ফলে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই কর্মসূচির আওতায় টিকা দেওয়া হবে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে টিকাদানে আগ্রহের কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

শনিবার ইউএনবিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

তিনি জানান, টিকা নিতে সাধারণ মানুষের আগ্রহ দেখে গণটিকার মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

গণটিকা কার্যক্রম
গণটিকা কার্যক্রম

চট্টগ্রামে গণটিকা নিতে কেন্দ্রে ভিড়, ভোগান্তিতে মানুষ

চট্টগ্রামে শনিবার সকাল থেকে নগরীর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন ৪১টি ওয়ার্ড ও জেলার ১৫টি উপজেলায় একসঙ্গে এ টিকাদান কর্মসূচি চলে। চট্টগ্রাম নগরীতে চরম ভোগন্তির মধ্যে গণটিকার প্রখম দিনের কার্যক্রম শেষ হয়।

ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন টিকা নিতে আসা লোকজন। কেন্দ্রগুলোতে মানুষের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। নগরী ও জেলায় একদিনে (শনিবার) সাড়ে চার লাখ লোককে গণটিকা কার্যক্রমে করোনার প্রথম ডোজ দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছিল স্বাস্থ্য বিভাগ।

তবে উপজেলাগুলোতে সুষ্ঠুভাবে কার্যক্রম শুরু হলেও নগরীর কেন্দ্রগুলোতে দেখা গেছে অব্যবস্থাপনা। সময়মতো স্বাস্থ্যকর্মীরা কেন্দ্রে না আসায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। এ ছাড়া বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্রের বাইরে সড়কে দেখা গেছে মানুষের লম্বা লাইন।

সকালে নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে স্থাপন করা অস্থায়ী টিকাকেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে ভিড় করতে থাকে টিকা প্রত্যাশীরা। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় অনেককে। সময়মতো স্বাস্থ্যকর্মীরা কেন্দ্রে না আসায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। মোস্তফা হাকিম কলেজ কেন্দ্রে টিকাগ্রহণে ইচ্ছুক হাজারও নারী-পুরুষের ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকদের। এ ছাড়া বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্রের বাইরে সড়কে দেখা গেছে মানুষের লম্বা লাইন।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, “চট্টগ্রামে গণটিকা কার্যক্রম সকাল থেকে সুষ্ঠুভাবে চলছে। সকালে লালদিঘীর পাড় টিকাদান কেন্দ্রসহ নগরীর বেশ কটি কেন্দ্র সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। টিকা নিতে আসা লোকজন সুশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা গ্রহণ করছেন।”

তিনি আরও বলেন, “আজ একদিনে নগরী ও জেলার ১৫টি উপজেলায় সাড়ে চার লাখ মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। আশা করছি, আমরা সফল হবো।”

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জেলা স্বাস্থ্য সুপার সুজন বড়ুয়া বলেন, “জেলার ১৫টি উপজেলার ২০০ ইউনিয়নের মধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে এ গণটিকা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। মহানগরীতে সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় টিকাদান কার্যক্রম চলছে। নগরীর মধ্যে তিনটি কেন্দ্র অফিসার্স ক্লাব, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে টিকাদান কার্যক্রম মনিটরিং করা হচ্ছে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে। পর্যাপ্ত পরিমাণে টিকার মজুত আছে। কেন্দ্রে আসা সবাই এ টিকা পাবেন।”

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কার্যালয় সূত্র জানায়, সিটি করপোরেশনের আওতাধীন ৪১টি ওয়ার্ডে শনিবার একদিনে এক লাখ ৮৪ হাজার লোককে করোনার টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। কর্মসূচির আওতায় প্রতি ওয়ার্ডে সাড়ে চার হাজার নাগরিককে এ টিকা দেওয়া হবে। প্রতি ওয়ার্ডে পাঁচটি টিকা কেন্দ্র থেকে এই কর্মসূচি চালানো হচ্ছে।

ক্যাম্পেইনের কার্যক্রম পরিদর্শনের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) সাবিনা ইয়াসমিন, অতিরিক্ত সচিব (বাজেট অনুবিভাগ) রাশেদা আক্তার, চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর এবং চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী ও এম.ও সিভিল সার্জন ডা. ওয়াজেদ চৌধুরী।

XS
SM
MD
LG